মারধর করা হয় এই ছাত্রীকেই। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
মহিলা কামরায় বসার জায়গা নিয়ে শুরু হয় বচসা। তার মধ্যে ঢুকে পড়লেন পাশের কামরার কিছু পুরুষ যাত্রী। মহিলা কামরায় ঢুকে তাণ্ডব চালাল তারা। গুরুতর জখম হন এক ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে গণ্ডগোল চললেও দেখা মেলেনি রেল পুলিশের। এমনকী পরে অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে তা নিতে চায়নি জিআরপি থানা।
বুধবার ডায়মন্ড হারবার লোকালে এই ঘটনায় শেষ অবধি অবশ্য ডায়মন্ড হারবার জিআরপি থানা অভিযোগ নেয়। তবে তা অবরোধ, বিক্ষোভের চাপে। গণ্ডগোলে আহত ফকিরচাঁদ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী অর্পিতা রায় কলেজে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরীক্ষা দিতে পারেননি। বিষয়টি জেনে ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ। এর পরেই এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ নেয় জিআরপি।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকালে। ট্রেনের মহিলা কামরায় বসার জায়গা নিয়ে দু’দল মহিলার মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হলে অর্পিতা-সহ আরও দু’এক জন তা থামাতে যান। ট্রেনটি সংগ্রামপুরে ঢুকলে বচসারত এক দল মহিলা পাশের সাধারণ কামরা থেকে সাত-আট জন পুরুষ যাত্রীকে ডেকে নিয়ে আসেন। অর্পিতার অভিযোগ, তাঁরা মহিলাদের উপর মারধর শুরু করেন। মেয়েদের জামা ধরে টানাটানি করে।
অর্পিতার অভিযোগ, “দীর্ঘ সময় ধরে হেনস্থা চললেও রেল পুলিশের দেখা পাইনি। কলেজে যাওয়ার আগে জিআরপি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তারা শুধু তাঁর নাম ঠিকানা লিখে ছেড়ে দেয়। অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।” ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত সাহার নেতৃত্বে ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে ছাত্রছাত্রীরা গেলে আরপিএফ-ও অভিযোগ নিতে চায়নি। বেলা ২-৩০ নাগাদ স্টেশনে শিয়ালদহগামী একটি ট্রেন প্রায় ২০ মিনিট অবরোধ করে ছাত্রছাত্রীরা। তার পরেই লিখিত অভিযোগ নেয় জিআরপি থানা।
অমিত বলেন, “আরপিএফ অসহযোগিতা করছে। এদের কর্তব্যে গাফিলতির জন্যই আমাদের হেনস্থা হতে হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।” রেল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, আরপিএফ নয়, এ রকম ঘটনায় অভিযোগ জিআরপি থানাতেই নেওয়ার কথা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আরও দাবি করেছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে তারা অর্পিতার জন্য আরেক বার পরীক্ষা নেওয়ার আবেদন জানাবে।
ডায়মন্ড হারবার গার্লস হাই স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা রীতা ভট্টাচার্য গড়িয়া-ডায়মন্ড হারবার লাইনের নিত্যযাত্রী। তাঁর কথায়, “প্রায় প্রতিদিনই দেখতে পাই মহিলা কামরায় কিছু ছেলেরা উঠে পড়ে। তারা প্রায়ই অভব্য আচরণ করে থাকে। পুলিশ নিষ্ক্রিয়।” একই অভিযোগ আরও এক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মালা মণ্ডলেরও।
ডায়মন্ড হারবার জিআরপি থানা সূত্রে খবর, ওই রেল যাত্রীদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy