অগ্নিগর্ভ নেপালে জেল ভেঙে পালিয়েছেন হাজার হাজার বন্দি! তাঁদের অনেকেই বিহার, উত্তরপ্রদেশের সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছেন। ওই দুই রাজ্যের সীমান্তে ইতিমধ্যেই ৩০ জনকে পাকড়াও করেছে সীমান্ত সীমা বল (এসএসবি)। এই পরিস্থিতিতে বাংলার পানিট্যাঙ্কি সীমান্তেও কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি সংলগ্ন খড়িবাড়িতে মেচি নদীর ও পারে নেপাল। এ পারে ভারত। এলাকায় কোনও কাঁটাতার নেই। মুক্ত সীমান্ত হওয়ায় অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে এসএসবি। তা রুখতেই মেচি নদীর একপ্রান্ত ঘিরে ফেলেছেন জওয়ানেরা।
সতর্ক রাজ্য প্রশাসনও। সীমান্ত এলাকার থানাগুলিকে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের উপর কড়া নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের নজরদারিও। পুলিশ সূত্রে খবর, কেউ অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে, তাঁকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
নেপালে অশান্তির আবহে উত্তরবঙ্গেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা পড়শি রাজ্য হওয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি এবং এ রাজ্যের সীমান্তের দিকে তাঁর নজর ছিল। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘‘সকলে ভাল থাকুন। পুজো ভাল কাটুক। পুজো কমিটিগুলো এখনও ঠিকমতো প্যান্ডেল বানাতে পারছে না। আপনাদের সকলকে অনুরোধ করব, দায়িত্বশীল হোন। কোনও জায়গায় যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেটা দেখুন।’’
বৃহস্পতিবার পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে পাহারায় এসএসবি। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নেপালে আটকে থাকা ভারতীয়েরা ধীরে ধীরে পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত দিয়ে ফিরতে শুরু করেছেন। সকলের চোখেমুখেই আতঙ্কের ছাপ। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শতাধিক মানুষ সীমান্ত পারাপার করেছেন। প্রত্যেকের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখেই ভারতে প্রবেশের ছাড়পত্র দিয়েছে এসএসবি। এ ছাড়াও জরুরি ভিত্তিতে তেলের ট্যাঙ্কার ও সব্জির বেশ কয়েকটি ট্রাক নেপাল থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ট্রাক চালকেরা।
পানিট্যাঙ্কির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার প্রবীন প্রকাশও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছি। সকাল থেকে কিছু আটকে থাকা মানুষ ফেরত আসছেন। সকলের নথি যাচাই করে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। আমরা সীমান্তে পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র চালু করেছি। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’’
নেপাল থেকে ফিরে আসা কাটিহারের বাসিন্দা তাপস জোতদার বলেন, ‘‘নেপালের অবস্থা এখনও খারাপ। খাওয়াদাওয়ার সমস্যা রয়েছে। গ্যাস মিলছে না। চিন্তায় আছি। পরিবারের আরও কয়েক জন সেখানে রয়েছেন। আমি মেয়েকে নিয়ে এসেছি।’’