শ্রীনুর শোকার্ত স্ত্রী পূজা।
শ্রীনু নায়ডু খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের এক সূত্রের খবর, পাঁচ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে ওই পাঁচ জনের নাম জানায়নি পুলিশ। পুলিশের ওই সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও সূত্র মেলেনি। সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বুধবার বিকেলে খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্ট এলাকায় তৃণমূলের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন শ্রীনু। এই ওয়ার্ডেরই তৃণমূল কাউন্সিলর শ্রীনুর স্ত্রী পূজা। দুষ্কৃতী হামলায় নিহত হন শ্রীনুর ‘ডান-হাত’ বলে পরিচিত ধর্মা রাও-ও। জখম হন আরও তিন জন। ওই দিন বিকেল ৩টে নাগাদ কার্যালয়ের সামনে এসে দাঁড়ায় ধূসর রঙের একটি গাড়ি। কয়েক জন যুবক নেমে সটান কার্যালয়ে ঢুকে যায়। তাদের মুখ ঢাকা ছিল। কার্যালয়ের বাইরে ব্যাপক বোমাবাজি হয়। আততায়ীরা গুলি চালাতে চালাতে কার্যালয়ে ঢোকে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত মঙ্গলবার কোনও এক জনের সঙ্গে ফোনে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় ধর্মার। ওই ব্যক্তি ধর্মাকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকিও দেয়। ধর্মাও না কি পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন। ফোনের কললিস্ট দেখে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশ মনে করছে, ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা গেলে তা তদন্তে এগোনো যাবে।
আরও খবর: ‘বাংলা সিনেমায় অফার পেয়েছিলাম’
ধর্মার কাছে ‘হুমকি-ফোন’ আসার কথা মানছেন তার স্ত্রী বি রোজা-ও। রোজা এখন শিশুসন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকেন। মঙ্গলবার দুপুরে রোজার কাছে এসেছিলেন ধর্মা। দুপুরে খাওয়ার সময় তাঁদের মধ্যে কিছু ক্ষণ কথা হয়। ধর্মাকে চুপ করে থাকতে দেখে স্ত্রী কারণ জানতে চান। লুকোছাপা না করে ধর্মা জানান, সকালে তাঁর কাছে একটা ফোন এসেছিল। এক জন ফোন করে তাঁকে গালিগালাজ করে। দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। রোজার কথায়, “কে ফোন করেছিল তা বলেনি। তবে ও বলেছিল, ওই লোকটাকে ও খুঁজে বের করবেই। মুড দেখে বুঝতে পেরেছিলাম, ও সমস্যার মধ্যে আছে।”
ঘটনাস্থলে বৃহস্পতিবারও কর্মী, সমর্থকদের ভিড়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা, খুনের পিছনে শ্রীনুরই খুব চেনা-পরিচিত কারও হাত থাকতে পারে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, খুব চেনা-পরিচিত না-হলে শ্রীনু যে ওই সময় দলের কার্যালয়ে রয়েছে তা জানা দুষ্কৃতীদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এ ভাবে ‘অপারেশন’ করে পালিয়ে যাওয়াও সম্ভব ছিল না। এক সময় যারা শ্রীনুর সঙ্গে ছিল, পরে ছেড়ে আসে, তাদের গতিবিধির উপরেও নজর রেখেছে পুলিশ।
পুলিশের এক সূত্রে খবর, কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম তিন জনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা হয়েছে। তাদের বয়ান নথিভুক্ত করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসা তথ্যগুলি মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। শীঘ্রই নির্দিষ্ট সূত্র মিলতে পারে।”
ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy