আগামী ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের বৃহৎ শিল্প সম্মেলন। তার আগেই রাজ্যের চার জেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগের প্রস্তাব জমা পড়েছে বলে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প দফতর সূত্রে খবর। নবান্নের মতে, এই প্রস্তাবগুলি শুধুমাত্র প্রাথমিক নয়, বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। ফলে বড় শিল্প সম্মেলনের আগেই এই ঘোষণা রাজ্যের শিল্পনীতি এবং প্রশাসনিক প্রচেষ্টার সাফল্যের ইঙ্গিত বহন করছে।
জঙ্গলমহল অঞ্চল— বিশেষ করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো জেলাগুলিতে বিনিয়োগ আসা প্রশাসনের কাছে বড় সাফল্য হিসাবে দেখা হচ্ছে। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন রাস্তা সম্প্রসারণ, শিল্প পার্ক, লজিস্টিক হাব এবং নীতিগত ছাড়ের পরও এই অঞ্চলে বড় শিল্পকে আকৃষ্ট করা চ্যালেঞ্জ ছিল। এ বার বিনিয়োগ নিশ্চিত হওয়ায় সরকার মনে করছে, জঙ্গলমহলের শিল্প মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটতে চলেছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বাঁকুড়ায় শিল্পোদ্যোগীদের কাছ থেকে এসেছে ৪,৫৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব। পূর্ব বর্ধমানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৯০ কোটি টাকা এবং পশ্চিম বর্ধমানে ৩৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি পুরুলিয়ায় আসতে চলেছে ৯০ কোটি টাকার বিনিয়োগ। এই প্রস্তাবগুলির বেশির ভাগই ইতিমধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে বলেই দাবি দফতরের আধিকারিকদের। অবশিষ্ট প্রস্তাবগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী, সব বিনিয়োগ প্রকল্প আগামী দেড় বছরের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও জানান, এই বিনিয়োগ পূর্ণাঙ্গ ভাবে বাস্তবায়িত হলে অন্তত ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে। পাশাপাশি পরিবহণ, খাদ্য সরবরাহ, হোটেল, জ্বালানি, পরিষেবা ও অন্যান্য সহায়ক শিল্পেও আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে দাবি নীতি নির্ধারকদের। জানা গিয়েছে, ব্যবসায়িক সুলভ পরিবেশ গড়ে তোলা, লাইসেন্স ইস্যুর দ্রুততা, রাজ্যস্তরে অনুমোদনের ‘সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম’ এবং সাম্প্রতিক ‘সিনারজি ও বিজনেস এনেবলমেন্ট’ সম্মেলন এই বিনিয়োগ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শিল্প ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রয়াস আগামী বছরের রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিকল্পনাকে নতুন মাত্রা দেবে। এখন নজর ১৮ ডিসেম্বরের শিল্প সম্মেলনের দিকে, যে দিন সরকারি ভাবে এই বিনিয়োগের ঘোষণা মঞ্চে উঠে আসবে।