গত কয়েক বছরে বারবার অশান্ত হয়েছে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহের বিভিন্ন এলাকা। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যারাকপুর, দুর্গাপুর অথবা রায়গঞ্জ থেকে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী পাঠাতে হয়েছে। তা পৌঁছতে দেরি হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের গোলমালেও দ্রুত পর্যাপ্ত বাহিনী না পৌঁছনোর অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যে পুলিশকর্তারা কার্যত সেই অভিযোগ মেনে নিয়ে বলছেন, শীঘ্রই রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের একটি ব্যাটালিয়নের সদর দফতর মুর্শিদাবাদের সুতিতে মোতায়েন করার কথা হয়েছে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘অশান্তি সৃষ্টি হলে তা দ্রুত থামাতে হয়। কিন্তু ব্যারাকপুর, দুর্গাপুর অথবা রায়গঞ্জ থেকে বাহিনী পাঠাতে সময় লাগে। সেই সময়ের মধ্যে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে দু’টি ব্যাটালিয়নের কথা বাহিনীর কর্তারা ভাবলেও শুক্রবার রাতে চূড়ান্ত হয়েছে যে, ব্যারাকপুর থেকে অষ্টম ব্যাটালিয়নকে স্থানান্তরিত করা হবে সুতিতে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সুতিতে কোথায় সশস্ত্র বাহিনীর সদর দফতর হবে, তা-ও ঠিক হয়েছে। মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাম্প আছে, সেগুলিও সুতির ছাউনিতে নিয়ে আসা হবে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর ‘বিকেন্দ্রীভূত’ চরিত্র থাকে। যাতে কোথাও গোলমাল হলে আশপাশ থেকে দ্রুত বাহিনী পৌঁছতে পারে। জরুরি পরিস্থিতিতে বাহিনী পাঠানোর আগে জওয়ানদের প্রস্তুত হওয়া, দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝানো (ব্রিফিং) ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। তারও সময় লাগে। তাই কত ক্ষণে বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছবে, সেই হিসাবের মধ্যে এগুলির সময়ও ধরতে হয়।
রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ১১টি ব্যাটালিয়ন আছে। এ ছাড়াও, আইআর ব্যাটালিয়ন, স্ট্র ব্যাটালিয়ন, ইএফআর, স্ট্রাকো ব্যাটালিয়ন, নেতাজি, জঙ্গলমহল, নারায়ণী ব্যাটালিয়ন আছে। কিন্তু এগুলির কোনওটির সদর দফতর মুর্শিদাবাদ বা মালদহে নেই। সব জেলা এবং পুলিশ জেলায় ‘ডিজি রিজ়ার্ভ ফোর্স’ নামেও ৪০-৮০ জন সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ান থাকেন। কোনও গোলমালে তাঁদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘এই সংখ্যক জওয়ান দিয়ে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ক্যাম্পে নিয়মিত শারীরিক কসরত করার বন্দোবস্ত থাকে না। সে ক্ষেত্রে জওয়ানদের সক্ষমতা কমছে। তার ফলে গোলমাল সামলাতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)