Advertisement
E-Paper

ঝগড়ার পরে প্রাণ বাঁচালেন চালকই

সুমিত সোমবার জানান, গত ২৭ জুলাই সকালে গাড়ি নিয়ে বাটানগর যাচ্ছিলেন। সঙ্গে স্ত্রী কাকলি মিত্র রায়, দুই কন্যা ঐশ্বর্যা এবং এণাক্ষী।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৮
ক্যাবচালক বালি দাস ও শিক্ষক সুমিত রায়।

ক্যাবচালক বালি দাস ও শিক্ষক সুমিত রায়।

গাড়িতে গাড়িতে জোর ধাক্কা। অভিযোগ জানাতে থানায় রওনাও হয়েছিলেন এক অঙ্কের শিক্ষক এবং এক ক্যাবচালক। কিন্তু থানায় যাওয়ার পথে শিক্ষক হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁর প্রাণ বাঁচালেন ওই ক্যাবচালকই।

বাড়ি ফেরার পরে নিউটাউনের স্কুলের শিক্ষক সুমিত রায় বলছেন, ‘‘যাঁর সঙ্গে ঝগড়া করলাম, তিনিই আমার প্রাণ বাঁচালেন!’’ আর ক্যাবচালক বালি দাসের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘ঝগড়া হয়েছে তো কী, মানুষটাকে বাঁচাতেই হবে। আর কিছু ভাবিনি।’’

সুমিত সোমবার জানান, গত ২৭ জুলাই সকালে গাড়ি নিয়ে বাটানগর যাচ্ছিলেন। সঙ্গে স্ত্রী কাকলি মিত্র রায়, দুই কন্যা ঐশ্বর্যা এবং এণাক্ষী। সাড়ে ১১টা নাগাদ আলিপুরে দুর্গাপুর ব্রিজের আগে অ্যাপ-ক্যাবের সঙ্গে সুমিতের গাড়ির ধাক্কা লাগে। কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তার জেরে যানজট তৈরি হলে সেখানে যান কলকাতা পুলিশের এক সার্জেন্ট। তাঁর হস্তক্ষেপে দু’জনেই রওনা হন থানার দিকে।

সুমিত বলেন, ‘‘ব্রিজ থেকে এগনোর পরে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। চোখে অন্ধকার দেখি। এসএসকেএমে আমাদের বন্ধু সুমন্ত্র সরকার রয়েছেন। বড় মেয়েকে শুধু বলতে পেরেছিলাম, আমাকে এসএসকেএমে নিয়ে চল।’’ এই পরিস্থিতিতে পথচলতি মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে থাকেন উদ্‌ভ্রান্ত স্ত্রী। এগিয়ে আসেননি কেউ। যাঁর সঙ্গে ঝগড়া, তাঁর গাড়ি হঠাৎ থামল কেন? গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে যান বালি। তাঁর কথায়, ‘‘দেখলাম, সুমিতবাবুর জ্ঞান নেই। দুটো মেয়েই বাচ্চা। ভদ্রমহিলা একা কী করবেন? আমার গাড়ি রাস্তার পাশে রেখে ওঁদের গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসি। আর এক হাতে লাল কাপড় নাড়াতে নাড়াতে সোজা হাসপাতালে যাই।’’

শুধু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াই নয়, কাকলি জানালেন, হাসপাতালে জরুরি বিভাগের টিকিট কাটা, ট্রলি জোগাড় করা, কার্ডিয়োলজি বিভাগে নিয়ে যাওয়া, সবই করেন বালি। তাঁর কথায়, ‘‘বালির মতো মানুষ যে রয়েছেন, তা সকলের জানা দরকার। আমি ওঁকে শুধু বলেছিলাম, আপনিই আমাদের ভরসা।’’ চিকিৎসক সুমন্ত্র বলেন, ‘‘হৃদরোগের ক্ষেত্রে প্রথম এক ঘণ্টায় ভর্তি করা গুরুত্বপূর্ণ। চালকের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে।’’ রবিবার সুমিতদের বাড়িও গিয়েছিলেন বালি। সুমিত বলেন, ‘‘শুনলাম, অন্যত্র থাকার জন্য অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা বালির কাছে জবাবদিহি চেয়েছে। দেখবেন, ওঁর যেন কোনও ক্ষতি না হয়!’’

হাত বাড়ালেই সব সময় এমন বন্ধু তো মেলে না!

APP Cab Humanity
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy