‘তবু অনন্ত জাগে’
রবীন্দ্রনাথ তাঁর পুরো জীবন জুড়ে দেখেছিলেন অসংখ্য মৃত্যু মিছিল। মাত্র আট বছর বয়সে প্রিয় গণদাদা অর্থাৎ গণেন্দ্রনাথের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম প্রিয়জন বিয়োগের বেদনা। তার পর একে একে মা সারদাসুন্দরী দেবী, তার কয়েক বছরের মধ্যেই নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু। এরপর স্ত্রী মৃণালিনী দেবী, বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কন্যা রেণুকা ও বেলা, কনিষ্ঠ পুত্র শমী সকলেই বিদায় নিয়েছেন কবির জীবিতকালেই। চলে গিয়েছেন আরও কত নিকট আত্মীয় ও বন্ধু।
এই প্রিয়জনের মৃত্যু যন্ত্রনা এক দিকে যেমন তাঁকে বেদনা, আঘাত, শোক, তাপে জর্জরিত করেছে, অন্য দিকে সেই সব যন্ত্রণা থেকে তৈরি হয়েছে অনবদ্য কিছু সৃষ্টি। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়েও তিনি যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছেন। আর এই ভাবনা থেকেই ‘শ্রাবণের ২২, কোনও মৃত্যুদিন নয়’ এই নামকরণের বুনন হয়েছে। বেঙ্গল ওয়েব সলিউশনের উদ্যোগে ২০ অগস্ট, রবিবার কলামন্দিরে সেই অনুষ্ঠানেরই সমাপতন হল।
মোট দু’টি ভাগে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ভাগে ছিল রবীন্দ্রনাথের লেখা বিভিন্ন গান, কবিতা এবং নানান জানা অজানা গল্প। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানের বিন্যাস ও ভাষ্যকারের ভূমিকায় ছিলেন অমিত মিত্র। এবং গানে ছিলেন স্বনামধন্যা সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় জয়তী চক্রবর্তীর গানের মধ্য দিয়ে। রবীন্দ্র-কবিতায় রাজা এবং রবীন্দ্রনাথের গানে তা প্রস্ফুটিত হল জয়তীর কণ্ঠে। অনুষ্ঠানটি একটা সুতোয় বাঁধলেন অমিত মিত্র। ২০ অগস্ট অর্থাৎ রবিবার কলামন্দিরের দর্শক আসন ছিল পূর্ণ। গানে, গল্পে কথায় দর্শক-শ্রোতা সহ সকলেরই মন কেড়েছিল এই অনুষ্ঠান।
এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এই ধরনের একটা অন্য রকমের অনুষ্ঠানের অংশ হতে পেরে তিনি আপ্লুত। পাশাপাশি তিনি রবীন্দ্রনাথেরই সৃষ্টি ‘তবু অনন্ত জাগে’-এর এই ভাবনাকে অন্য ভাবে উপস্থাপিত করার জন্য ভাষ্যকার অমিত মিত্রকে অত্যন্ত সাধুবাদ জানিয়েছেন। পরবর্তীতে এই ধরনের অনুষ্ঠান আরও হোক এই আবেদনও তিনি রেখেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy