Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Murder

Murder: স্ত্রীকে খুন করে পুলিশের কাছে

পুলিশের দাবি, বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল মমতাজ বিবির (৩০) দেহ। পাশে ঘুমোচ্ছিল দুই নাবালিকা কন্যা।

ধৃত রহমত। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

ধৃত রহমত। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২২ ০৬:১৪
Share: Save:

তখনও অন্ধকার কাটেনি। সদ্য ঝাঁপ খোলা চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল পুলিশের টহলদার ভ্যান। হঠাৎ লুঙ্গি পরা এক ব্যক্তি এসে পুলিশকর্মীর পা জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করেন। পুলিশের দাবি, তিনি বলতে থাকেন, ‘আমাকে ধরুন। বউকে খুন করে ফেলেছি। সাইকেল নিয়ে থানাতেই যাচ্ছিলাম’। যুবককে প্রথমে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে করেছিলেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু বারবার তিনি এক কথা বলায়, পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে বাদশাহী রোডের আলিনগর মোড় থেকে ওই যুবককে নিয়ে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে তাঁর গ্রামে যায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল মমতাজ বিবির (৩০) দেহ। পাশে ঘুমোচ্ছিল দুই নাবালিকা কন্যা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) কল্যাণ সিংহরায় বলেন, ‘‘রবিবার ভোর ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। শেখ রহমত নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ধৃত জেরায় পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রথমে শ্বাসরোধ করে, পরে স্ত্রীর মাথায় শাবল জাতীয় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়। এ দিন বর্ধমান আদালতে তোলা হলে ধৃতকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের বাড়ি কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামে। ১৩ বছর আগে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। বছর দশেক ভাতারের পানোয়া গ্রামে রয়েছেন তাঁরা। পেশায় রাজমিস্ত্রি রহমতপ্রথমে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। কয়েক বছর আগে, পাশে এক চিলতে জায়গায় মাটির বাড়ি তৈরি করেন তিনি। এ দিন সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনের দরজার ঘরে খাটে মমতাজের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। দু’পাশে রয়েছে নয় ও তিন বছরের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে বলে, ‘‘বাবা রাতে বাড়ি ফেরার আগেই আমরা ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বাবা-মায়ের মধ্যে কী হয়েছে, বলতে পারব না।’’ আপাতত মামার বাড়িতেই থাকবে তারা।

মমতাজের বাবা শেখ মহিনের দাবি, ‘‘ওদের অর্থসঙ্কট ছিল। তা কাটাতে গিয়ে বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রচুর টাকা ধার নিয়েছিল। সে নিয়ে দু’জনের অশান্তি হত। কিন্তু সে জন্য আমার মেয়েকে খুন করবে, ভাবতে পারছি না!’’ পড়শিদের একাংশের দাবি, ‘‘রাগের মাথায় নয়, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে।’’

যদিও বর্ধমান আদালতে তোলার পথে রহমতের দাবি, ‘‘আমাকে ঠিকমতো খেতে দিত না। যত্ন করত না স্ত্রী।’’ তাঁর আফশোস, ‘‘মেয়েদের কাছে মুখ দেখাব কী করে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Bhatar Crime Crime against Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE