হাসপাতালেও হামলার কথা শুনে স্থির থাকতে পারছি না। শুনেছি, যুদ্ধের নিয়ম—সাধারণ নাগরিকদের উপরে হামলা করার কথা নয় কোনও পক্ষের। কিন্তু সোরোকা হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রায় ৭০ জন জখম হয়েছেন বলে জেনেছি। এ বার আর ততটা নিরাপদ বোধ করছি না। বাড়ির লোকও দুশ্চিন্তা করছেন।
ইরান-ইজ়রায়েলের যুদ্ধের পরিবেশে আপাতত আমি আছি ইজ়রায়েলের রাজধানী তেল আভিভ থেকে সাড়ে দশ কিলোমিটার দূরে পেতাহ টিকভা শহরে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার গ্রাম থেকে কাজ নিয়ে বছরখানেক আগে এসেছি। এই শহরের আকাশে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘটেছে গত কয়েক দিনে। সবই আকাশে ধ্বংস করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। তবে হাসপাতালের উপরে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা কিছুটা কাঁপন ধরাচ্ছে মনে।
গত কয়েক রাত ঘন ঘন সাইরেন বাজছে। তা কানে এলেই ছুটতে হচ্ছে মাটির নীচের ‘বাঙ্কারে’। শুধু বৃহস্পতিবার রাতটা একটু শান্তিতে ঘুমিয়েছি। তবে দিনের বেলা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত এই শহরে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জনজীবনও স্বাভাবিক। পথে গাড়ি-ঘোড়া চলছে। যে প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করি, সেখানেও উৎপাদন স্বাভাবিক। শুনেছি, এখানকার বহু তরুণ-তরুণী সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফলে, যুদ্ধ নিয়ে ভয়ডর কারও নেই। কিন্তু জনবসতির উপরে ইরান আক্রমণ করতে পারে বলে শুনছি, সেটাই চিন্তার।
আমাদের দেশের সরকার ইজ়রায়েলে থাকা ভারতীয়দের ফেরানোর ব্যবস্থা করছে। যাঁরা ফিরতে চান, তাঁদের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আমি আরও কয়েকটা দিন দেখতে চাই। দেশে ফিরলে, এই পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে এমন কাজ কি আর পাব?
অনুলিখন: সীমান্ত মৈত্র
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)