E-Paper

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের ভরসায় চলছে স্কুল

শিক্ষকের অভাবে এ বছর বন্ধ হয়েছে হরিহরপাড়ারই লোচনমাটি জুনিয়র হাই স্কুল। অভিভাবকদের আশঙ্কা, নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ না হলে তরতিপুর স্কুলটিরও একই দশা হতে পারে।

মফিদুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:০৬
একা বিদ্যালয় চালাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইকবাল হোসেন।

একা বিদ্যালয় চালাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ইকবাল হোসেন। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে ছাত্র মোট ৪০ জন। কিন্তু শিক্ষক মোটে এক। তা-ও অতিথি শিক্ষক। তিনিও অবসর নিয়েছেন কয়েক মাস হল। তা হলে ছাত্রদের পড়াবে কে? এখনও তাই ওই শিক্ষক, ইকবাল হোসেন স্কুল ছেড়ে যেতে পারেননি। একই ঘরে বসে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৪০ জন ছাত্রকে পড়াচ্ছেন তিনি। কিন্তু মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার তরতিপুর জুনিয়র হাই স্কুলের এই দশায় প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবে কত দিন চলবে?

আইনি জটে আটকে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ। ফলে শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে অধিকাংশ উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় বা জুনিয়র হাই স্কুল। তরতিপুর জুনিয়র হাই স্কুলের অবস্থাও তথৈবচ। ২০১১ সালে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুল চত্বরেই তৈরি হয় ওই স্কুল। তিন জন অতিথি শিক্ষক ছিলেন তখন। ২০১৪ সালে যোগ দেন এক পূর্ণ সময়ের শিক্ষক। বছর দুয়েকের মধ্যে অতিথি শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। ২০১৮ সালে যোগ দেন এক শিক্ষাকর্মী। ২০২১ সালের নভেম্বরে অন্যত্র বদলি নেন একমাত্র স্থায়ী শিক্ষক আবু নওসাদ ফারুক। ফলে স্কুল সচল রাখতে ২০২২ সালের প্রথম দিকে তরতিপুর হাই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন অতিথি শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন। গত ৩১ অগস্ট তাঁর সে চাকরির মেয়াদও ফুরিয়েছে। এ দিকে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের সই জাল করে বিদ্যালয়ের একাধিক তহবিলের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একমাত্র শিক্ষাকর্মী প্রহ্লাদকুমার মাঝির বিরুদ্ধে। সূত্রের দাবি, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই ফেরার তিনি।

স্কুল সচল রাখতে ইকবাল হোসেন একপ্রকার বাধ্য হয়েই নিয়মিত এসে পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন ও মিড-ডে মিল সামলাচ্ছেন। ‘একা কুম্ভ’ ইকবালের কথায়, “অগস্টে আমার ৬৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। চাকরির মেয়াদ ফুরিয়েছে। কিন্তু পড়ুয়াদের কথা ভেবে, প্রশাসনের অনুরোধে স্কুল চালিয়ে যাচ্ছি।”

শিক্ষকের অভাবে এ বছর বন্ধ হয়েছে হরিহরপাড়ারই লোচনমাটি জুনিয়র হাই স্কুল। অভিভাবকদের আশঙ্কা, নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ না হলে তরতিপুর স্কুলটিরও একই দশা হতে পারে। মিনারুল হালসানা নামে উচ্চ প্রাথমিকের এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমরা টেট উত্তীর্ণ হয়ে, প্রশিক্ষণ নিয়ে বসে আছি। দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা চলছে। দ্রুত নিয়োগের বন্দোবস্ত করলে স্কুলগুলি বাঁচবে। উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরাও বাঁচবেন।”

হরিহরপাড়া চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী বলেন, “ওই অতিথি শিক্ষককে স্কুল চালাতে বলা হয়েছে। নতুন করে অতিথি শিক্ষকের খোঁজ চলছে। উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হলে সমস্যার সমাধান হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

school Murshidabad

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy