একে সে এ বছর লেটলতিফ। তার ওপর মাঝপথে হাজির হয়েছে আর এক বাধা। ফলে মৌসুমি বায়ু তথা বর্ষার গতিপ্রকৃতি নিয়ে ঘোর চিন্তায় পড়ে গিয়েছে দিল্লির হাওয়া অফিস।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ার খবর পেলেই এত দিন আশা দেখেছে গরমে নাজেহাল বাংলা। কিন্তু এ বার একটি নিম্নচাপই সম্ভাব্য ‘ভিলেনে’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চলেছে বলে আশঙ্কায় আবহবিদেরা।
ভারত মহাসাগরে দানা বেঁধেছে এই নিম্নচাপ। রবিবার রাত পর্যন্ত যা শ্রীলঙ্কার কাছে থানা গেড়ে রয়েছে। আবহবিদদের ধারণা, আজ সোমবার সেটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ছুটে যাবে তামিলনাড়ুর দিকে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের কর্তারা বলছেন, নিম্নচাপটি ইতিমধ্যে বর্ষার চালচলনে প্রভাব ফেলেছে। তার ধাক্কায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অন্য শাখাটি আন্দামানে ঢুকে পড়তে পারে ১৭ মে, নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে। এর পরে সেটি তামিলনাড়ু উপকূল দিয়ে স্থলভূমিতে না-ঢুকে পূর্ব উপকূল বরাবর অন্ধ্রের দিকে ধেয়ে এলে প্রভাব আরও বাড়বে।
প্রশ্নগুলো তখনই উঠেছিল। এর মানে কি, বর্ষা আগেভাগেই মূল ভূখণ্ডে হাজির হবে? কপাল খুলবে দক্ষিণবঙ্গের?
সে আশায় জল ঢেলে দিচ্ছেন আবহবিদেরা। ‘‘মোটেও তা নয়। বরং বর্ষার উপরে এর কুপ্রভাব পড়ারই আশঙ্কা বেশি।’’— বলছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ। তাঁর বক্তব্য: প্রাক্-বর্ষার এই সব নিম্নচাপ সমুদ্রের স্থিতাবস্থা নষ্ট করে দেয়। বর্ষায় ছন্দপতন ঘটে।। নিম্নচাপগুলোর গতিবিধিও যথেষ্ট খামখেয়ালি।
মৌসম ভবনের কর্তারাও তাই বলছেন। সদরের জাতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রে বসে নিম্নচাপটির গতিবিধিতে নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা।
রবিবার রাতেও জাতীয় আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের এক কর্তা জানান, নিম্নচাপের মুখ তামিলনাড়ু উপকূলের বদলে অন্য কোনও দিকে ঘুরবে— এমন ইঙ্গিত এখনও নেই।
নিম্নচাপের প্রভাব বর্ষায় পড়ুক বা না-পড়ুক, বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির হাল-হকিকত মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়। অথচ বর্ষার প্রাথমিক পূর্বাভাস দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের সদর দফতর এপ্রিলে জানিয়ে
দিয়েছিল, দেশে এ বার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বর্ষা হবে। কিন্তু মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে সেই মৌসম ভবনই বলছে উল্টো কথা। এ বছর মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে পা রাখতে বর্ষার দেরি হবে বলে জানিয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy