E-Paper

পুলিশ পরিচয় দিয়ে তরুণীকে ডেকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত যুবক

দু’বছর ধরে চলা মামলায় শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বাহারকে দোষী সাব্যস্ত করেন বারাসতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (সপ্তম) প্রজ্ঞা গার্গী ভট্টাচার্য (হুসেন)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ০৯:৩৩
শনিবার দোষী ব্যক্তির সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা।

শনিবার দোষী ব্যক্তির সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা। —প্রতীকী চিত্র।

তাঁর মোবাইল ফোন ‘হ্যাক’ করা হয়েছে। তাতে থাকা ব্যক্তিগত সব ছবি চলে যাচ্ছে অন্যদের ফোনে। তাই মোবাইলে ‘হ্যাকিং-প্রতিরোধী’ ব্যবস্থা চালু করা দরকার। মিথ্যে এমন গল্প ফেঁদে কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ফোন করা হয়েছিল পুলিশ আধিকারিক পরিচয় দিয়ে। বলা হয়েছিল, মোবাইল নিয়ে থানার বাইরে দেখা করতে। সেই ফোন পেয়ে তরুণী থানার কাছে পৌঁছলে তাঁকে সেখান থেকে ফোন করে অন্যত্র ডেকে পাঠানো হয়। তার পরে তরুণী সেখানে পৌঁছলে তাঁকে ধর্ষণ করে সেই দুষ্কৃতী। এমনকি, কাউকে কিছু জানালে তাঁর বিবস্ত্র ছবি ভাইরাল করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। যদিও তরুণী শেষ পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় পুলিশ বাহার আলি নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করে।

দু’বছর ধরে চলা সেই মামলায় শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার বাহারকে দোষী সাব্যস্ত করেন বারাসতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (সপ্তম) প্রজ্ঞা গার্গী ভট্টাচার্য (হুসেন)। আজ, শনিবার দোষী ব্যক্তির সাজা ঘোষণা হওয়ার কথা।

সরকারি কৌঁসুলি সৌভিক বসুঠাকুর জানান, তদন্তের শেষে মামলা শুরু হওয়ার পরে দু’বছরের মাথায় আদালত রায় দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই যুবক কোনও ভাবে অভিযোগকারিণীর নম্বর জোগাড় করে তাঁকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফোন করে ডেকে পাঠায়। ধর্ষণ করার পরে তরুণীর মুখ বন্ধ রাখতে তাঁকে একাধিক বার ভয়ও দেখায়। ওই ঘটনার পরে বাহার আলির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে আরও একটি মামলা রুজু হয়েছে পকসো আইনে। সেই ঘটনাতেও এই ধরনেরই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।’’

আদালত সূত্রের খবর, ২০২২ সালে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ওই ঘটনায় তরুণীকে বলা হয়েছিল, তাঁকে কাছাকাছি এলাকার একটি থানা থেকে ফোন করা হচ্ছে। তরুণীর বাড়ি সেখান থেকে খুব দূরে নয়। ফোনে তাঁকে বলা হয়, ওই থানার বাইরে ‘বিক্রমবাবু’ নামে এক আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে। তরুণী তাঁর বাবাকে নিয়ে সেই থানার কাছে গেলে তাঁকে জানানো হয়, ওই আধিকারিকের সঙ্গে নিকটবর্তী এলাকার একটি মুরগির খামারে গিয়ে দেখা করতে হবে। তরুণীকে বলা হয়, তিনি যেন একা ওই আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। সরকারি কৌঁসুলি জানান, তরুণী ওই খামারে গেলে প্রথমেই তাঁর ফোনটি নিয়ে নেয় অভিযুক্ত বাহার আলি। তার পরে ফোন থেকে কল রেকর্ড, ওয়টস্যাপ, ব্যক্তিগত ছবি-সহ সব কিছু মুছে ফেলা হয়। তার পরে ওই দুষ্কৃতী তরুণীকে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পরে তরুণীর বিবস্ত্র ছবি তুলে নেয় ওই দুষ্কৃতী। তার পরে হুমকি দিয়ে জানায়, ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে ওই ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেবে সে। এর পরে কোনও মতে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে ওই তরুণী বাবাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরের দিন নিজের মাকে সব কথা খুলে বলেন। সে দিন ওই তরুণীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা চেয়ে হুমকি দেয় বাহার আলি। যদিও তরুণী ঘাবড়ে না গিয়ে এর পরে স্থানীয় থানায় গিয়ে গোটা ঘটনা খুলে বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরেই পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Barasat court abuse Rape Fake Police

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy