বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের ভোটের ব্যবধান ছিল ১০%। পঞ্চায়েতে তা আরও ৫% বাড়বে— মঙ্গলবার নদিয়ার বাদকুল্লায় এক জনসভায় দাঁড়িয়ে এই দাবি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘(সারা রাজ্যে) দু’দলের মধ্যে ভোটের এই ফারাক এ বার বেড়ে ১৫% হবে।”
২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল ৪৭.৯৪% ভোট পেয়েছিল, বিজেপি পায় ৩৮.১০% ভোট। অভিষেকের দাবি, গত দু’মাস ধরে ‘নবজোয়ার যাত্রা’ নিয়ে রাস্তায় নেমে যা দেখেছেন, তার ভিত্তিতেই তাঁর এই ধারণা। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘হাই কোর্টকে ধন্যবাদ জানাই। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েছে।’’
তবে বিধানসভা ভোটে বিপুল জয় সত্ত্বেও মতুয়া ও উদ্বাস্তু-প্রধান দক্ষিণ নদিয়ায় বড় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। এই এলাকার ন’টি কেন্দ্রের সব ক’টিই জেতে বিজেপি। উপনির্বাচনে শান্তিপুর আসনটি তৃণমূল পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে। সিএএ নিয়ে লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মতুয়া উদ্বাস্তু ভোটারদের একাংশ বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছে। এই জমি পুনরুদ্ধারও তৃণমূলের বড় পরীক্ষা। এ দিন অভিষেক বলেন, “২০১৯ সালে সিএএ হয়েছে। ৪২ মাস হয়ে গেল, এখনও রুল ফ্রেম হয়নি।” অসমের উদাহরণ টেনে এর পরে তিনি দাবি করেন, বিজেপির বাঙালি বিদ্বেষের প্রমাণ বার বার পাওয়া গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলার টাকা কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে গুজরাতে, উত্তরপ্রদেশে।”
এর পাশাপাশি অভিষেক তুলেছেন দুর্নীতি মামলায় একাধিক সিবিআই তদন্তের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “আমাদের কোনও নেতা দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে সিবিআই-ইডি দিয়ে তাকে শ্রীঘরে ঢোকাও। কিন্তু তোমরা তো চোরেদের আরও বড় পদ দিয়ে পুরস্কৃত করো!” এ দিনই, উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে অভিষেককে নাম না করে নিশানা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, ‘‘লক্ষ লক্ষ লোক ‘চোর’ বলছে। কাদের পিছনে ভাইপো তুমি দৌড়বে?” তাঁর দাবি, “কয়েক দিন অপেক্ষা করুন, ভাইপোর সাইরেন বাজবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার প্রায় সঙ্গে-সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের ডোমকল। সেখানে বাম-কংগ্রেস জোট শক্তিবৃদ্ধি করেছে, বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনাও রয়েছে। এ দিন সেখানে গিয়ে রোড-শো করেন অভিষেক। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষুব্ধ চার বিধায়কের মধ্যে তিন জনই উপস্থিত ছিলেন। রবিউল আলম চৌধুরী ও আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে দেখা যায় হুমায়ুন কবীরকেও। তবে কর্মীদের অনেকের আক্ষেপ, শুধু এক ঝলক দেখাই হল। অভিষেক শুধু হাত নেড়েই ফিরে গেলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)