Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
abhisekh bandyopadhyay

পথ দেখাবেন ‘আগামীর অভিষেক’, নবীন-প্রবীণরা একসুর তৃণমূলে

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর বর্ষীয়ান নেতাদের বাড়ি গিয়ে প্রণাম করে পথচলা শুরু করেছেন অভিষেক।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২১ ১২:২৭
Share: Save:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর বর্ষীয়ান নেতাদের বাড়ি গিয়ে প্রণাম করে পথচলা শুরু করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবীণ নেতৃত্বের প্রতি যুবনেতার ওই সম্মান প্রদর্শনে বার্তা গিয়েছে দলের সর্ব স্তরে। সেই সূত্রেই মঙ্গলবার রাত থেকে দলের কর্মী-সমর্থকরা নেটমাধ্যমে একটি নতুন ‘হ্যাশট্যাগ’ চালু করেছেন। তাতে লেখা ‘আগামীর অভিষেক’। ওই হ্যাশট্যাগের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে অভিষেকের সাক্ষাতের ছবি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে হ্যাশট্যাগের সঙ্গে লেখা হচ্ছে, ‘পুরোনোকে বাদ দিয়ে নয়। তাঁদের সঙ্গী করেই পথ চলবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।’

সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার এমন আচরণে আপ্লুত দলের বর্ষীয়ান নেতারাও। রবিবার সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন অভিষেক। সুব্রতের পরিষদীয় রাজনীতি এ বছরই সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে পা রেখেছে। নিজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার নিরিখে নবপ্রজন্মের এই সৌজন্যের রাজনীতিকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন তিনি। একই বক্তব্য প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়েরও।

সুব্রতের কথায়, ‘‘ঠিক অভিষেকের মতো না হলেও আমাদের সময়েও ভোটে জিতলে দেবীদাকে (দেবীপ্রসাদ ঘোষাল), মানুদাকে (সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়) প্রণাম করতে যেতাম। সেই সময় যাঁরা আমাদের সিনিয়র ছিলেন, তাঁদেরও প্রণাম করে আসতাম। সে সব নিয়ে তেমন আলোচনা হত না। কোনও একটা ভাল কিছু ঘটলে অবশ্যই প্রণাম করতে যেতাম। তখন যিনি দলের সভাপতি, তাঁকেও প্রণাম করতাম। নেতা হিসেবে প্রিয়দাকেও (প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি) প্রণাম করতাম। তবে এমন মডেলে নয়।’’ সুব্রতের আরও বক্তব্য, ‘‘সে সব ক্ষেত্রে আলোচনা হত না। তবে অভিষেক যেটা করছে, সেটা খুবই ভাল। বড়দের মধ্যেও যাতে অহংবোধ না আসে। ছোট ভেবে যাতে মনে না আসে, ওইটুকু ছেলে কি পারবে? এমন প্রশ্ন যেন না আসে। সেগুলো যাতে কেটে যায়। আর কতটা মেধা ওর মধ্যে এসেছে, তা ওর সঙ্গে আলোচনা করে আমরাও বুঝতে পেরেছি। বাঙালি সৌজন্যবোধে বড়দের প্রণাম করে আশীর্বাদ নেওয়ার চল তো রয়েছে। অবশ্যই অভিষেকের এই উদ্যোগের একটা মূল্য আছে। এমন পন্থায় পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় হয়। পার্টির সর্ব স্তরের কর্মীদের কাছে সংস্কৃতির একটা বার্তা যায়। এমন বার্তা যাওয়াটা ভাল।’’

প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ তথা অধ্যাপক সৌগত বলছেন, ‘‘একজন নেতা যিনি সদ্য দায়িত্ব পেয়েছেন, তিনি প্রবীণ নেতাদের কাছে গিয়ে প্রণাম করে পরামর্শ নিচ্ছেন, এমন ঘটনা ভারত তথা বাংলার রাজনীতিতে কখনও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। বিষয়টা আমার খুবই ভাল লেগেছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন প্রজন্ম আমাদের কাছে আসছে। এটা অভিনব। নতুন প্রজন্ম একটা বার্তা দিতে চাইছে— পুরনো প্রজন্মকে বাদ দিয়ে নয়। পুরনো প্রজন্মের পরামর্শ নিয়ে ওরা আগামীর পথ চলতে চায়। অভিষেক আমাকে বলেছে, কী ভাবে আমাদের পরামর্শ নেবে, কর্মপন্থা কী হবে, পার্টির নীতি কী হবে, কী ভাবে পার্টি চলতে পারে— সে সব নিয়ে আমাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করবে।’’

প্রসঙ্গত, সুব্রত ও সৌগত ছাড়াও দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ও লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন অভিষেক। তাদের কাছেও নিয়মিত গিয়ে পরামর্শ নেবেন বলে জানিয়ে এসেছেন ডায়মন্ড হারবারের তরুণ সাংসদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

abhisekh bandyopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE