E-Paper

‘অধীর-বিজেপি রামধনু’, পাল্টা তোপ কংগ্রেসেরও

কংগ্রেস-বিজেপি ‘যোগসাজশ’ দেখাতে তৃণমূলের অস্ত্র হয়েছে শনিবার হাজরা মোড়ে সরকারি কর্মীদের সভাও। সেখানে কংগ্রেসের তরফে আব্দুল মান্নান, অসিত মিত্র, কৌস্তভ বাগচীরা গিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ০৭:২৭
Abhishek Banerjee and Adhir Ranjan Chowdhury.

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অধীর চৌধুরী। ফাইল চিত্র।

জনসংযোগ যাত্রায় মুর্শিদাবাদে দিয়ে লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বারেবারেই নিশানা করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির সঙ্গে অধীরের তলে তলে সমঝোতা রয়েছে, এই অভিযোগই করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। বিজেপির কোনও নেতার সঙ্গে ২০১৯ সালে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের ফোনে কথা হয়েছিল বলে এ বার অভিযোগ করেছেন অভিষেক। সেই সঙ্গেই তৃণমূলের হাতিয়ার হয়েছে মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে সরকারি কর্মীদের সভা-মঞ্চে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেস ও বামেদের সরব হওয়ার ঘটনা। যাবতীয় বিষয়েই আবার পাল্টা জবাব দিয়েছে কংগ্রেসও।

ভগবানগোলায় শনিবার রাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে সরাসরি আক্রমণ করে অভিষেক বলেছেন, ‘‘অধীর বি টিম। কোন বিজেপি নেতার সঙ্গে ২০১৯ সালে আপনার কথা হয়েছিল, তার কল-রেকর্ড বার করব। আপনার সাহস থাকলে আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করুন!’’ সেই সঙ্গে অভিষেকের দাবি, ‘‘অধীর ও বিজেপি রামধনু জোট।’’ তাঁর আহ্বান, ‘‘এই জেলায় দু’টি লোকসভা আসনে আমরা জয়ী হয়েছি। বহরমপুরেও আমাদের জেতান। তা হলে দাবি আদায়ে সুবিধা হবে।’’ বহরমপুরে গিয়ে রবিবার অভিষেক আরও দাবি করেছেন, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের লড়াইয়ের ক্ষমতা নেই।’’ গরু পাচার রুখতে অধীর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখেছেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন।

অভিষেকের এই আক্রমণের জবাবে রবিবার কর্নাটকে ভোটের প্রচারে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকে অধীর বলেছেন, ‘‘সেই ২০১৯ সালের কথা এখন মনে পড়ল! বার করব, করব বলেন কেন? হিম্মত থাকলে সামনে আনুন কী হয়েছিল! আমি যদি বলি, দিল্লিতে ইডি দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আপনার বিষোদগার কেন বেড়ে গেল?’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের লোকজন এবং বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কথা তো বলতে হয়ই। আগামী ১৩ মে আবার নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা হবে। কেন্দ্রীয় সংস্থার অধিকর্তা বাছাই নিয়ে বৈঠক আছে। এই সব কথা বলে আমাকে বিজেপি বানানো যাবে না!’’

কংগ্রেস-বিজেপি ‘যোগসাজশ’ দেখাতে তৃণমূলের অস্ত্র হয়েছে শনিবার হাজরা মোড়ে সরকারি কর্মীদের সভাও। সেখানে কংগ্রেসের তরফে আব্দুল মান্নান, অসিত মিত্র, কৌস্তভ বাগচীরা গিয়েছিলেন। তখন সিপিএমের যুব ও ছাত্র নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। এর পরে সেখানে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি-বাম-কংগ্রেস ‘নয়া জোট’ গড়ে আক্রমণে নেমেছে বলে সরব তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর এ দিন বলেছেন, ‘‘ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য সরকারি কর্মীদের আন্দোলন-মঞ্চে আগে আমিও গিয়েছি। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে আমাদের নীতি ও আদর্শের লড়াই। কংগ্রেসের কেউ কি বিজেপির সঙ্গে মঞ্চভাগ করেছেন? যদি কেউ সেটা করেন, তা হলে কংগ্রেসের অবস্থান-বিরোধী কাজ হবে, তার দায় দল নেবে না।’’

‘জোট’ সংক্রান্ত প্রচারের প্রেক্ষিতে মান্নানের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় আমানতকারীদের স্বার্থে বা অতীতে আরও নানা প্রশ্নে সব বিরোধী একসঙ্গে সরব হয়েছে। দিল্লিতে এক বার একটা অবস্থান থেকে আমি আর প্রদীপ ভট্টাচার্য বেরিয়ে আসার পরে মহম্মদ সেলিম ও বাবুল সুপ্রিয় গিয়েছিলেন। সব কিছু ভুলে বিজেপির সঙ্গে মিলে আন্দোলন করতে হবে, এই রকম কথা তো সরকারি কর্মীদের মঞ্চে বলিনি!’’ কৌস্তভও বলেছেন, ‘‘দাবিটা সমর্থন করে সরকারি কর্মীদের মঞ্চে গিয়েছিলাম, বিজেপির মঞ্চে নয়। আমরা নেমে যাওয়ার পরে বিজেপি নেতারাও গিয়েছিলেন। এটা কি বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত করা হল?’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘যন্তর মন্তরে কুস্তিগিরদের ধর্নায় যাঁরাই যাচ্ছেন, তাঁদের কি জোট হয়ে যাচ্ছে?’’ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে! একসঙ্গে যান বা না যান, রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন— বিজেপির দুই ভাই, সিপিএম ও কংগ্রেস (আই)!’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Abhishek Banerjee Adhir Ranjan Chowdhury TMC Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy