Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Abhishek Banerjee

‘তৃণমূল ২২ হতেই আটকে গেল বাংলার টাকা’! পাওনা আদায়ে আবারও দিল্লিকে তোপ অভিষেকের

মুর্শিদাবাদে ‘জনসংযোগ যাত্রা’র সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দলের সাংসদ সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে ২২ হয়েছে বলেই বাংলার টাকা আটকে রাখার সুযোগ পাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবগ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৩ ১৫:৫১
Share: Save:

রাজ্যে শাসক তৃণমূলের হাত শক্ত হলে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার রাজ্যের প্রাপ্য আটকে রাখতে পারবে না। এই যুক্তিকে সামনে রেখে আবারও আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে জেতানোর আহ্বান জানালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদে ‘জনসংযোগ যাত্রা’র সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দলের সাংসদ সংখ্যা ৩৪ থেকে কমে ২২ হয়েছে বলেই বাংলার টাকা আটকে রাখার সুযোগ পাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ তাঁর যুক্তি, ২০১৪ সালের মতো ২০১৯ সালেও যদি ৩৪টি আসন পেত তৃণমূল, তা হলে মোদী সরকার বাংলার পাওনা আটকে রাখতে পারত না। অভিষেককে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরাও।

রাজ্য জুড়ে ‘জনসংযোগ যাত্রা’য় বেরিয়ে অভিষেক এখন মুর্শিদাবাদে রয়েছেন। সোমবার নবগ্রামের ভোলাডাঙা ফুটবল ময়দানে সভা করেন তিনি। সেখানে অভিষেকের বক্তব্য, বাংলার প্রাপ্য কোটি কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। মানুষ আওয়াজ তুললে সেই টাকা কোনও সরকারই আটকে রাখতে পারে না। তাই, নিজেদের স্বার্থেই তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করার আহ্বান জানান অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা থেকে ১০ লক্ষ মানুষ দিল্লি গেলে কোনও নেতার পক্ষে কানে তুলো গুঁজে বসে থাকা সম্ভব নয়। আমাদের কথা ওদের শুনতেই হবে।’’

রবিবারই অভিষেক আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টির মধ্যে ৪০টি আসনের জন্য ঝাঁপানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা বেশি হলে টাকা আটকে রাখতে পারত না দিল্লি। সোমবারও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘তৃণমূল যখন জিতেছে, বিজেপি চেয়েও বাংলার টাকা আটকাতে পারেনি। ২০১৪ থেকে ২০১৯, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায়। তৃণমূলের ৩৪টা সাংসদ। নরেন্দ্র মোদী পেরেছেন মানুষের টাকা আটকে রাখতে? পারেননি। কারণ, ৩৪ জন সাংসদ ছিল। ২০১৯-এ সাংসদ ৩৪ থেকে কমে হল ২২। সঙ্গে সঙ্গে আপনার টাকা আটকে গেল। তৃণমূল জিতলে মানুষ শক্তিশালী হবে, তৃণমূল হারলে মানুষ দুর্বল হবে। কারণ তৃণমূল মানুষের দল। বাংলার মানুষের অধিকার দিল্লির বুক থেকে ছিটিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। মানুষকে সংগঠিত করার দায়িত্ব আপনাদের সকলের।’’

বিরোধীদের নিশানা করে অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূল হাই কোয়ালিটির ডিভিডি। ডিভিডি যখন ভিসিআরে চালাবেন, কানে শুনতেও পাবেন, চোখে দেখতেও পাবেন। বিজেপি আর কংগ্রেস হচ্ছে ভাঙা অডিয়ো ক্যাসেট। টেপে চালালে শুধু কানে শুনতে পাবেন। চোখে দেখতে পাবেন না। চোখে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কানে শুনে নয়। আমাদের সরকার যা বলেছে, তা করেছে।’’ সেই সূত্রে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিরও ‘ব্যাখ্যা’ দেন অভিষেক। বলেন, ‘‘সর্ব স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উন্নয়নকে সামনে রেখে এগিয়ে চলাই হল নবজোয়ার। হেরে গিয়ে মানুষকে শাস্তি নয়, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে স্বস্তি। তার নামই তৃণমূলে নবজোয়ার। মানুষের প্রতিনিধিকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার নামই তৃণমূলে নবজোয়ার।’’

অভিষেকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘’২২ পান বা ৪২। কেন্দ্রের টাকা পেতে গেলে খরচের হিসাব দিতেই হবে। মনে রাখতে হবে, এটা দুর্নীতিপরায়ণ কংগ্রেসের সরকার নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটা কথা বারবার বলেছেন, দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সেই কারণেই তো দেশে যে ক’টি দুর্নীতিপরায়ণ দল রয়েছে, তারা একজোট হতে চাইছে। যার নেতৃত্বে তৃণমূল।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘বামেরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তো এই প্রশ্নগুলোই আসেনি। বিজেপি-তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়া এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কে কার বিরুদ্ধে কোথায় লড়ছে, মানুষ সব নজর রাখছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করে কোনও লাভ হবে না। ’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE