E-Paper

অভিষেক বৈঠকে ১৫ই ভোটার যাচাইয়ে প্রস্ততি নিয়ে জটিলতা তৃণমূলে

ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে মমতার গঠিত রাজ্য স্তরের কমিটির সদস্য হলেও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫৪
Share
Save

কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হল দুপুরে। স্থগিত হল রাতে!

এই বৃত্তেই বৃহস্পতিবার আবর্তিত হল শাসক দলে ভোটার তালিকা যাচাইয়ের সাংগঠনিক প্রস্তুতি। এই জটিলতায় ইতি টানতে আজ, শুক্রবার এই ব্যাপারে পরবর্তী নির্দেশিকা দিতে পারেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, মমতার সেই নির্দেশের ভিত্তিতে নতুন করে দু-তিন দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত সাংগঠনিক প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

রাজ্যে ‘ভুয়ো ভোটারে’র আশঙ্কার কথা জানিয়ে দলীয় কর্মীদের আগেই পথে নামার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। সেই মতোই এ দিন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। বৈঠকে ঠিক হয়, সাংগঠনিক জেলা-ভিত্তিক কমিটি করে দ্রুত ভোটার তালিকার গরমিলের খোঁজে নামা হবে। কিন্তু দুপুরের বৈঠকে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে গিয়েছে রাতেই। দলীয় সূত্রে খবর, কমিটি গঠনের এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে ‘অবহিত’ ছিলেন না তৃণমূল নেত্রী। বিষয়টি জানতে পেরে আপাতত তা স্থগিত রাখতে বলেছেন তিনি।

ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজে মমতার গঠিত রাজ্য স্তরের কমিটির সদস্য হলেও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ঠিক হয়েছে, আগামী ১৫ মার্চ জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন তিনি।

তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভায় ৩৬ জনের যে কমিটি তৈরি করে জেলাভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তা স্থগিত করা হয়েছে। নেতাজি ইন্ডোরের ওই সভার এক দিন পরেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সেই মতোই এ দিন দলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের জন্য গঠিত রাজ্য স্তরের কমিটির সদস্যেরা। সেখানে জেলার নেতাদের অভিজ্ঞতা, তথ্য ও প্রশ্নের ভিত্তিতে ভোটার তালিকায় ‘গরমিল’ নিয়ে আলোচনার পরে জেলা স্তরেও একটি করে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গেই ঠিক হয়, সেই কমিটির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাজ্য স্তরে গঠিত কমিটির সদস্যেরা এই গোটা প্রক্রিয়া চালাবেন। এই সিদ্ধান্তই স্থগিত হয়েছে রাতে। সূত্রের খবর, জেলা স্তরে কমিটির বিষয়েও দু’-এক দিনের মধ্যে স্পষ্ট নির্দেশিকা দিতে পারেন মমতা। প্রথমে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত ও পরে তা স্থগিত রাখার বিষয়টি দলের অন্দরে নানা রকম গুঞ্জন তৈরি করেছে।

সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি রাজনৈতিক স্তরেও বিষয়টি নিয়ে চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সভাপতি বক্সী, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস ও ফিরহাদ হাকিম এ দিনই কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরে গিয়ে এ ব্যাপারে দলের অভিযোগ জানিয়েছেন। পরে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে জনমতকে প্রভাবিত করতে একই পরিচয়পত্রের নম্বরে একাধিক ভুতুড়ে ভোটার তৈরির চেষ্টা হয়েছে।’’ চন্দ্রিমার বক্তব্য, ‘‘পরিচয়পত্রের নম্বরটি যদি ‘ইউনিক’ হয়, তবে তা কী ভাবে একাধিক ভোটারকে দেওয়া হয়!’’

বিরোধীরা অবশ্য পাল্টা আঙুল তুলছে শাসক দলের দিকেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, “রাজ্যে তৃণমূল ১৭ লক্ষ ভোটারের নাম দু’টো করে বিধানসভায় ঢুকিয়ে রেখেছে। আমরা ১১ মার্চ নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছি। ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্ব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের। সেখানে এমন তিন জনকে বাছাই করা হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আছে, যাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বগলদাবা থাকেন!” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “ভূতুড়ে ভোটারের ভিড় বাড়িয়েছিল কারা? চিহ্নিত করুন তৃণমূল নেতাদের। এখন আবার বলা হচ্ছে, জাল ভোটার ধরলে দলে নাকি পুরস্কার দেওয়া হবে!’’ বিষয়টি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছে দার্জিলিং জেলা সিপিএমও। কার্যত একই সুরে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীরও দাবি, “ভূতুড়ে ভোটার, জাল ভোটের কারখানা তৃণমূলের নিজের ঘরেই আছে। ভাল করে ছাপ্পা দেওয়ার জন্য তৃণমূল শিক্ষা-স্বাস্থ্যের কথা না বলে, বাড়িতে কত জন ভোটার, কত জন তাঁদের ভোট দেবেন বা দেবেন না, কত জন পরিযায়ী, সেই সবের তালিকা তৈরি করছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।