Advertisement
E-Paper

প্রায় একশো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হাসপাতালে

ফরমান জারি হয়েছে, বাড়িতে প্রসব হওয়া শিশুর জন্মের শংসাপত্র পাওয়া যাবে না। পেতে হলে ২০ জন গ্রামবাসীকে নিয়ে সভা ডেকে তাঁদের সই নিতে হবে। পঞ্চায়েত সদস্যদেরও সই নিতে হবে। তা প্রধানের কাছে পাঠাতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:৪০
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কুলপি হাসপাতাল নজর কেড়েছে এ রাজ্যে। ২০১৭-১৮ সালে পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই কাজে ৯৯ শতাংশ সফল তারা। জেলা প্রশাসন ও মহকুমা প্রশাসনের শংসাপত্র পেয়েছে ওই হাসপাতাল।

প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের সংখ্যা বাড়ার পিছনে কী কারণ, তা নিয়ে ইউনিসেফের পরিচালনায় দিন কয়েক আগে হাসপাতালে সাংবাদিক বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের ক্ষেত্রে ৯৯ শতাংশ সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করেন হাসপাতালের ব্লক মেডিক্যাল অফিসার আবু সালেম মহম্মদ মেহেফুজ উল করিম। উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ত্রিদিব রায়। আলোচনায় উঠে আসে, কিছু দিন আগে পর্যন্ত গর্ভবতীদের হাসপাতাল বিমুখতার কথা। অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁদের হাসপাতালমুখী করতে হয়েছে।

ফরমান জারি হয়েছে, বাড়িতে প্রসব হওয়া শিশুর জন্মের শংসাপত্র পাওয়া যাবে না। পেতে হলে ২০ জন গ্রামবাসীকে নিয়ে সভা ডেকে তাঁদের সই নিতে হবে। পঞ্চায়েত সদস্যদেরও সই নিতে হবে। তা প্রধানের কাছে পাঠাতে হবে। প্রধান গণস্বাক্ষরিত সেই আবেদন ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের কাছে পাঠাবেন। সেই আবেদন অনুযায়ী জন্মের শংসাপত্র মিলবে। কিন্তু সময় লাগবে দু’বছর। সেই সময়-পর্বে যে শিশু জন্মেছে, তার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মাকে হাসপাতালে আসতে হবে। এই নিয়মের কড়াকড়ি কাজ দিয়েছে অনেকটাই, দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

সমস্যা ছিল দাইমাদের নিয়েও। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা পাড়ার প্রসূতিদের প্রসব করিয়ে আসছেন। কাজটির বিনিময়ে তাঁরা হাতে কিছু টাকা পান। আর পান নতুন শাড়ি। প্রসূতিরা হাসপাতালে আসতে থাকলে তাঁদের রুজিতে টান পড়তে পারে। ফলে দাইমাদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিল কুলপি হাসপাতাল। ব্লক প্রশাসনের উপস্থিতিতে তাঁদের বোঝানো হয়, বাড়িতে প্রসব করালে শিশু ও মায়ের কী কী ক্ষতি হতে পারে। দাইমাদেরই অনুরোধ করা হয়, তাঁরাই যাতে প্রসূতিদের হাসপাতালে আনেন। বিনিয়ময়ে তাঁদের জন্য বার্ধক্য ভাতার ব্যবস্থা হবেই, আর্থিক সাহায্য এবং শাড়িও দেওয়া হবে। বিএমওএইচ বলেন, ‘‘খোঁজ করা হয় এলাকার হাতুড়ে চিকিৎসকদেরও। কারণ, অনেক পরিবারই হাতুড়েদের উপরে নির্ভর করে। হাতুড়েদের হাসপাতালে ডেকে বোঝানো হয়, কেন হাসপাতালে প্রসব জরুরি। হাসপাতালের পরামর্শ মতো তাঁরাও প্রসূতিদের হাসপাতালে পাঠাতে শুরু করেন। একই ভাবে এলাকার মৌলানাদেরও হাসপাতালে প্রসবের গুরুত্ব বোঝানো হয়।

এ ছাড়া আশাকর্মীরা নিয়মিত বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রসূতিদের বুঝিয়ে হাসপাতালে আনার দায়িত্ব পালন করছেন। এত কিছুর পরেও বিএমওএইচের আক্ষেপ, অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকায় কিছু গর্ভবতীকে অন্য হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাটের আরও উন্নয়ন না হলে প্রসূতিদের আনাও সমস্যা। খারাপ রাস্তায় ঢুকতে পারে না নিশ্চয়যান। প্রতিষ্ঠানিক প্রসব একশো শতাংশ করতে রাস্তাঘাটের উন্নতিও জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

Baby Newborn Hospital Delivery Kulpi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy