সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে। বারবার বলা হয়েছে সরকারের তরফেও। তবু খাস কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ঠাঁই না-পেয়ে সঙ্কটাপন্ন রোগীকে নিয়ে পরিজনদের এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়াতে হয়। ঠোক্কর খেতে খেতে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও বিরল নয়।
এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ভবন ফের নির্দেশিকা জারি করে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের স্মরণ করিয়ে দিল, মরণাপন্ন রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। যাবে না। সম্প্রতি কিছু সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতেই সোমবারের এই নির্দেশিকা।
৩০ মার্চ উল্টোডাঙায় বস্তির ঘরে আগুন লেগে জখম হয় ঈশিকা রায় নামে একটি শিশু। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ঈশিকাকে বিসি রায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে বলা হয়, মা ছাড়া শিশুকে ভর্তি করানো যাবে না। মা-ও যে অগ্নিদগ্ধ, তা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। সেখান থেকে শিশুটিকে প্রথমে আরজি কর, পরে এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হলে শয্যা নেই বলে জানিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয় ঈশিকাকে। কয়েক দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ছ’টি হাসপাতাল ঘুরে অগ্নিদগ্ধ এক শিশুর ঠাঁই হয়েছিল আরজি করে। তাকেও বাঁচানো যায়নি। বিসি রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে শিশু-মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও করেন সন্তান-হারানো অভিভাবকেরা।
সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন যে-দশ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তার অন্যতম বক্তব্য, রোগীকে বাঁচাতে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক পরিষেবা দিতে বাধ্য। কোনও অবস্থাতেই চিকিৎসায় অবহেলা করা যাবে না। যদি কোনও চিকিৎসক মনে করেন রোগীকে বাঁচাতে আরও উন্নত মানের চিকিৎসা প্রয়োজন, তার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসককেই সচেষ্ট হতে হবে। পুলিশি তদন্ত, জিজ্ঞাসাবাদের নামে চিকিৎসকেরা যাতে হয়রানির শিকার না-হন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশ-প্রশাসনকে।
স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ মেনে এই নির্দেশিকা আগেও ছিল। তবে মাঝেমধ্যে কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই আলোচনার ভিত্তিতে চিকিৎসকদের অবহিত করাতে আবার ওই নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy