আট বছরেরও বেশি পুরনো খুনের মামলায় আগাম জামিন পেলেন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেত্রী জাগরী বাস্কে এবং তাঁর স্বামী প্রাক্তন মাওবাদী নেতা রাজারাম সরেন ওরফে সাগেন সাঁওতাল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক আশুতোষ কর তিন পুলিশকর্মী-সহ চার জনকে খুনের ওই মামলায় তাঁদের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। শোভন কারক নামে আর এক আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীও খুনের চেষ্টার মামলায় এ দিন আগাম জামিন পেয়েছেন।
সরকারি আইনজীবী রাজকুমার দাস এ দিন কোনও আবেদনেরই বিরোধিতা করেননি। আদালতে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে ওঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন। সমাজের মূলস্রোতে ফিরেছেন। সারা জীবন মূলস্রোতে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।” আগাম জামিন নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই বলেও স্পষ্ট করে দেন সরকারি কৌঁসুলি। আগাম জামিন মঞ্জুর করলেও বিচারক জানিয়েছেন, বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন এই তিন মাওবাদী নেতা-নেত্রীকে আদালতে আনতে হবে। সেই দায়িত্ব নেওয়া হবে বলে জানান সরকারি আইনজীবী। এ দিন অবশ্য তিন জনের কেউই আদালতে আসেননি।
জাগরী, রাজারাম এবং শোভন, তিন জনই রাজ্যে পালাবদলের পরে আত্মসমর্পণ করেছেন। হোমগার্ডের চাকরিও পেয়েছেন। পুলিশের এক সূত্রের বক্তব্য, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী নেতা-নেত্রীরা পুলিশের ক্যাম্পে রয়েছেন। ফলে, কোনও মামলায় আগাম জামিন মিললে সমস্যা হবে না। এক সময়ের দাপুটে মাওবাদী নেতা-নেত্রী রাজারাম ও জাগরীর বিরুদ্ধে অবশ্য খুন-নাশকতার আরও অনেক মামলা রয়েছে। জাগরী শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলা, সাঁকরাইল থানায় ঢুকে পুলিশ খুনের মতো একাধিক বড়সড় হামলায় অভিযুক্ত।
জাগরী ও রাজারাম যে মামলায় আগাম জামিন পেলেন, সেই ঘটনাটি বেলপাহাড়ির। ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশের স্বাস্থ্য শিবির থেকে ফেরার পথে বেলপাহাড়ির ভেলাইডিহা অঞ্চলের হাতিডোবায় পুলিশের একটি ভ্যান ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের কবলে পড়ে। নিহত হন তিন পুলিশকর্মী ও এক স্থানীয় বাসিন্দা। বিস্ফোরক এতটাই শক্তিশালী ছিল যে মৃতদেহগুলি ৩০-৪০ ফুট দূরে জঙ্গলে ছিটকে পড়ে।
গোয়ালতোড়ের মাওবাদী নেতা শোভন এ দিন ২০০৯ সালের তিনটি মামলায় আগাম জামিন পেয়েছেন। তিনটি মামলাই খুনের চেষ্টার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy