Advertisement
E-Paper

স্ত্রী খুনে এক যুগ জেল খেটে হাইকোর্টে বেকসুর

স্ত্রীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে ১২ বছর পরে মুক্তি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২৪
উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারে নির্দোষ সাব্যস্ত হন কমলেশ।

উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারে নির্দোষ সাব্যস্ত হন কমলেশ।

মহিলা খুনের মামলায় দণ্ড ঘোষণার ১২ বছর পরে বেকসুর খালাস পাওয়া এক প্রৌঢ়ের চরিত্রে ছবি বিশ্বাসের অভিনয় অবিস্মরণীয় হয়ে আছে ‘সবার উপরে’ ছবিতে। বাস্তবে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল হাওড়ার উলুবেড়িয়ার একটি মামলায়।

স্ত্রীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে ১২ বছর পরে মুক্তি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার উলুবেড়িয়ার বড় গড়চুমুকের বাসিন্দা কমলেশ পোল্লে নামে ওই ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। রুপোলি পর্দার কাহিনি এবং বাস্তব ঘটনার মধ্যে তফাত মূলত দু’টি। প্রথমত, ছবিতে খুন হন অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্কহীন এক মহিলা। আর উলুবেড়িয়ার মামলায় হত্যা করা হয় অভিযুক্তের স্ত্রীকে। দ্বিতীয়ত, ছবিতে পুনর্বিচার পর্ব চলে নিম্ন আদালতে। আর কমলেশ মুক্তি পেলেন হাইকোর্টে।

কমলেশের আইনজীবী তথা ‘আদালত-বান্ধব’ কাকলি চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০০৭ সালের ৬ এপ্রিল শম্পা পোল্লে খুন হন। তাঁর বাবা মনোরঞ্জন মাইতি সেই দিনেই উলুবেড়িয়া থানায় জামাই কমলেশের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে ভোরবেলা শৌচ করতে মাঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে খুন করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় খুন হন শম্পা। পুলিশ চার দিন পরে গ্রেফতার করে কমলেশকে। জেলে থাকা অবস্থাতেই তাঁর বিচার চলে। ২০১৩ সালের ২৫ মার্চ উলুবেড়িয়া আদালত স্ত্রীকে খুনের দায়ে কমলেশকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। কিছু দিন পরে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি।

আপিল মামলার শুনানিতে কমলেশের আইনজীবী আদালতে জানান, শম্পার দুই বোন প্রধান সাক্ষী ছিলেন। পুলিশের কাছে তাঁরা জানান, জামাইবাবু তাঁদের সামনেই দিদিকে অস্ত্র দিয়ে খুন করে পুকুরে ঠেলে ফেলে দিয়েছেন। নিম্ন আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় দুই বোন জানান, তাঁরা ওই ঘটনা দেখে বাড়িতে এসে ফের শুয়ে পড়েন। দুই বোনের এমন আচরণ অস্বাভাবিক। সাক্ষীদের বক্তব্যও বিশ্বাসযোগ্য নয়। ঠিক কোন সময়ে শম্পা খুন হন, সেই ব্যাপারেও সাক্ষীরা ভিন্ন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কাকলিদেবী সওয়াল করেন, খুনের আগের রাতে কমলেশ স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে গ্রামে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলেন। স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর সদ্ভাব ছিল না, এমন প্রমাণ পুলিশ জোগাড় করতে পারেনি। খুনের উদ্দেশ্য নিয়েও পুলিশ স্পষ্ট কোনও বক্তব্য পেশ করতে পারেনি। যে-অস্ত্র দিয়ে মহিলাকে খুন করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার শরীরের আঘাত-চিহ্ন সেই ধরনের অস্ত্রের নয় বলে জানিয়েছেন ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক। খুনের সময় শম্পা অন্তঃসত্ত্বা থাকলেও তাঁর আরও দু’টি সন্তান রয়েছে। খুন নিয়ে পুলিশ তাদের বয়ান নথিভুক্ত করেনি।

আপিল মামলায় সরকারি কৌঁসুলি নেগিব আহমেদ জানান, দিদিকে খুন হতে দেখে বোনেরা ভয় পেয়ে ঘরে শুয়ে পড়েন। তাঁদের আচরণ অস্বাভাবিক ছিল না। তাঁদের সাক্ষ্যের উপরে নির্ভর করেই নিম্ন আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারে নির্দোষ সাব্যস্ত হন কমলেশ।

High Court Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy