Advertisement
E-Paper

ভারী মন নিয়েই পাহাড়ে চললেন রাজীবেরা

কাঞ্চনজঙ্ঘায় ওই অভিযানে গিয়ে মৃত হাওড়ার কুন্তল কাঁড়ার (৪৬) এবং মাদুরদহের বিপ্লব বৈদ্যকে (৪৮) তো বটেই, দলটির অন্য তিন পর্বতারোহীকেও চেনেন রাজীববাবু। যোগাযোগ রয়েছে মাকালু শৃঙ্গ জয় করে ফেরার পথে ‘নিখোঁজ’ পর্বতারোহী দীপঙ্কর ঘোষের সঙ্গেও।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৯ ০০:০১
হিমাচলপ্রদেশের চেমা শৃঙ্গে গিয়েছিলেন রাজীববাবুরা। ছবিটি যাত্রাপথের এক জায়গায়।

হিমাচলপ্রদেশের চেমা শৃঙ্গে গিয়েছিলেন রাজীববাবুরা। ছবিটি যাত্রাপথের এক জায়গায়।

কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে গিয়ে দুই পরিচিত পর্বতারোহীর মৃত্যুর খবরটা পেয়ে মন ভারী বর্ধমানের তেঁতুলতলার বাসিন্দা রাজীব মণ্ডলের। তিনি নিজেও একজন পর্বতারোহী। আর তাই বোধহয় দুঃসংবাদের পরেও এড়াচ্ছেন না পাহাড়ের ডাক। আজ, শনিবার দার্জিলিংয়ের ‘হিমালয়ের মাউন্টেনের’ এই প্রশিক্ষক সদলবলে বেরোচ্ছেন অভিযানে।

কাঞ্চনজঙ্ঘায় ওই অভিযানে গিয়ে মৃত হাওড়ার কুন্তল কাঁড়ার (৪৬) এবং মাদুরদহের বিপ্লব বৈদ্যকে (৪৮) তো বটেই, দলটির অন্য তিন পর্বতারোহীকেও চেনেন রাজীববাবু। যোগাযোগ রয়েছে মাকালু শৃঙ্গ জয় করে ফেরার পথে ‘নিখোঁজ’ পর্বতারোহী দীপঙ্কর ঘোষের সঙ্গেও।

‘বর্ধমান এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড নেচার ড্রাইভ সোসাইটি’র সম্পাদক রাজীববাবুর স্মৃতি জুড়ে বিপ্লববাবুর কথা। শুক্রবার দুপুরে তিনি বলেন, ‘‘তিন বছর ধরে বিপ্লবদার সঙ্গে যোগযোগ রয়েছে। আমরা রাজ্য সরকারের যুব দফতরের একটি কমিটিতে রয়েছি। সল্টলেকে বৈঠকও করেছি। সামিটে যাওয়ার আগে পরামর্শ নিয়েছিলাম।’’ তিনি আরও জানান, বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ে অভ্যাসের সময়ে তাঁদের মধ্যে পাহাড়-অভিযান, নতুন প্রজন্মকে পাহাড়ের নেশা কী ভাবে ধরানো যায়, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, ‘ক্লাইম্বিং-এর পদ্ধতি একরকম কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হত।

সিকিমের জংশং শৃঙ্গ (৭,৪০০ মিটার), গাড়োয়াল কেদার ডোম (৬,৭০০ মিটার) শৃঙ্গ জয় করেছেন রাজীববাবুরা। জংশং শৃঙ্গ অভিযানের সময়েও এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী বিপ্লববাবুর কাছ থেকে পাহাড়ে চড়ার কোন পথটা ভাল, কত দিন সময় লাগতে পারে, বিপদ কোথায়, এমন নানা তথ্য জেনেছিলেন রাজীববাবুরা। সঙ্গে গরম জলের ব্যবহার, শরীর ঠিক রাখতে উঁচু ক্যাম্পে যাওয়ার চেষ্টা করা-সহ নানা পরামর্শ, মিলেছিল তা-ও।

এই কথাগুলো বলতে বলতেই পশ্চিমে সূর্য ঢলে পড়ে। রাজীববাবু খবর পান, দীপঙ্করবাবু নিখোঁজ। খবর শুনেই তিনি বলেন, ‘‘দীপঙ্করদা আমাকে তুই বলে সম্বোধন করতেন। এক সঙ্গে ১৯৯৪-এ পুরুলিয়ায় প্রশিক্ষণ, তার পরেও কত ক্যাম্প করেছি। বর্ধমানে আমাদের ক্লাবেও দীপঙ্করদা এসেছেন।’’ শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ, পাহাড়ে চড়া নিয়ে কথা, পুরুলিয়ায় যাওয়ার সময়েও রাস্তায় দেখা হওয়া— দীপঙ্করবাবু নিয়ে এমনই নানা স্মৃতি রাজীববাবুর মনে।

তবে নানা ‘খারাপ’ খবরের মাঝেও পাহাড়ের ডাক ফিরিয়ে দিচ্ছেন না রাজীববাবুরা। আজ, শনিবার হিমাচলের কাংলাটারবো দু’টি শৃঙ্গ (৬,৩১৫ ও ৬,১২০ মিটার) ছোঁয়ার লক্ষ্যে বর্ধমানের ওই সংস্থার হয়ে ২৫ জন এগিয়ে যাবেন। ভয় লাগছে না? দলের সদস্য দীপা বিশ্বাস, রোহিত মজুমদারেদের মুহূর্তে জবাব, ‘‘আমরা তো জানি, কী ঘটতে পারে। এর জন্য কি ঘরে বসে থাকব? রাস্তায় যত জন দুর্ঘটনায় পড়েন, তার চেয়ে দুর্ঘটনার হার পাহাড়ে অনেক কম!’’

Kangchenjunga Mountaineering Rajiv Mondal Darjeeling Kuntal Karar Biplab Baidya Burdwan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy