দেবাশিস হালদার, আসফাকুল্লা নাইয়ার পরে এ বার ‘পোস্টিং’ বিতর্কে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন আর এক জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। সোমবার বদলির নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন জানান তিনি। হাই কোর্ট সূত্রের খবর, অনিকেতের আবেদন গৃহীত হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে মামলার শুনানি হতে পারে।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা, দেবাশিস, আসফাকুল্লার পাশাপাশি তার অন্যতম ‘মুখ’ হয়ে উঠেছিলেন অনিকেত। সম্প্রতি তাঁদের তিন জনের ‘পোস্টিং’ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। অভিযোগ, কোথায় নিয়োগ চান, নিয়ম মেনে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় তা সিনিয়র রেসিডেন্টদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা জানিয়েও ছিলেন। কিন্তু তার পরেও শুধুমাত্র ওই তিন জন পছন্দের জায়গায় ‘পোস্টিং’ পাননি। ঘটনাচক্রে, তিন জনই আরজি কর আন্দোলন পর্বে প্রথম সারিতে ছিলেন।
আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক অনিকেত সে সময়ই দেবাশিস, আসফাকুল্লার সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, পছন্দের জায়গায় যদি ‘পোস্টিং’ না দেওয়া হয়, তবে কাউন্সেলিংয়ের মানে কী? জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন ডব্লিউবিজেডিএফ সূত্রে সে সময় জানানো হয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে তিন জনেই মামলা করবেন। গত ৩০ মে দেবাশিস, আসফাকুল্লা কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন। সোমবার আবেদন জানানো হয়েছে অনিকেতের আইনজীবীর তরফে।
কাউন্সেলিং না মেনে ‘পোস্টিং’ দেওয়ায় স্বাস্থ্য ভবন ‘অনৈতিক’ কাজ করেছে, অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের। এর প্রতিবাদে ডব্লিউবিজেডিএফ-এর তরফে ইতিমধ্যেই আন্দোলনের ঘোষণাও করা হয়েছে। আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম দুই মুখ অনিকেত এবং আসফাকুল্লারও। অনিকেত জানান, সিনিয়র রেসিডেন্টদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার পরে তিন বছরের ‘বন্ড’ থাকে। সেই বন্ড অনুযায়ী সরকারের তরফে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কোথায় কাকে নিয়োগ করা হবে, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এবং মেধাতালিকার ভিত্তিতে তা ঠিক করা হয়। মেধাতালিকায় থাকা চিকিৎসকেরা পোস্টিংয়ের জন্য বেছে নিতে পারেন পছন্দের জায়গা। যাঁদের নাম তালিকার উপরের দিকে থাকে, তাঁরা আগে সুযোগ পান। কিন্তু তাঁদের তিন জনের ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলে অনিকেতের অভিযোগ। প্রসঙ্গত, দেবাশিসকে মালদহের গাজোল, আসফাকুল্লাকে হুগলির আরামবাগ এবং অনিকেতকে রায়গঞ্জে ‘পোস্টিং’ দেওয়া হয়েছে।