—প্রতীকী চিত্র।
চার দিনের ব্যবধানে ফের লালবাজার অভিযান করল বামেরা। তবে কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে এ বার লালবাজারের অদূরে রাতভর ধর্নায় বসেছেন বাম নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশিই প্রশ্ন তোলা হয়েছে, শিক্ষা দুর্নীতিতে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, খাদ্য দুর্নীতিতে তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হলে স্বাস্থ্য দুর্নীতি সামনে আসার পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না কেন? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
বৌবাজারে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সামনে জমায়েত করে শুক্রবার শুরু হয়েছিল বামফ্রন্টের ডাকে লালবাজার অভিযান। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রয়াণে শোক জানাতে বাম নেতা-কর্মীরা কালো ব্যাজ লাগিয়ে এবং প্রয়াত নেতার স্মরণে পোস্টার নিয়েও মিছিলে এসেছিলেন। বৌবাজারের ফিয়ার্স লেনের মুখে ৯ ফুট উঁচু ব্যারিকেড লাগিয়ে পথ আটকে দিয়েছিল পুলিশ। সেখানেই অবস্থান শুরু করেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘আমরা এখানে যুদ্ধ করতে আসিনি! যেখানে আটকেছে, সেখানেই অবস্থান হবে। এই অপদার্থ পুলিশ কমিশনারের পদে থাকার যৌক্তিকতা নেই। আর স্বাস্থ্য দফতরে এমন দুর্নীতি, অনিয়মের চক্র গড়ে উঠল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী করছিলেন? স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক’দিন স্বাস্থ্যভবনে গিয়েছেন?’’ মিছিল ও অবস্থানে শামিল হয়েছিলেন আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর দেব, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। ছিলেন শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তী, কল্লোল মজুমদার, নিরাপদ সর্দার-সহ সিপিএমের বহু নেতাই।
আর জি কর-কাণ্ডে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বলে ফের অভিযোগ করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা তো বলিনি মুখ্যমন্ত্রী খুন করেছেন বা খুন করিয়েছেন। আমরা তো বলিনি তৃণমূল কংগ্রেস ধর্ষণ করেছে। আমাদের প্রশ্ন, অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে কেন? শিক্ষা দুর্নীতিতে যদি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, খাদ্য দুর্নীতিতে যদি তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হন, তা হলে স্বাস্থ্য দুর্নীতিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না কেন?’’ ময়নাগুড়িতে দলের একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে গিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও এ দিন বলেছেন, ‘‘রেশন দুর্নীতিতে যদি খাদ্যমন্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদ এবং গ্রেফতার করা হয়, শিক্ষা দুর্নীতিতে যদি শিক্ষামন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়, তা হলে স্বাস্থ্য দফতরের দুর্নীতিতে কেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না?’’
চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রমাণ লোপাট এবং আর জি কর হাসপাতালে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে নগরপালের ইস্তফার দাবিও তুলেছেন সেলিম। পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেডের উপরে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন কিছু বাম সমর্থক। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মন্তব্য, ‘‘চাইলে দু’মিনিটেই এই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলা যায়। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে আমাদের লড়াই নয়। কিছু অফিসার যাঁরা শাসকের কথায় চলছেন, তাঁদের হুঁশিয়ারি দিতে এসেছি। সাধারণ পুলিশকর্মীদের সঙ্গে শত্রুতা নেই। এখানে যে ছাউনি তৈরি হবে, রাতে বৃষ্টি নামলে পুলিশকর্মীরাও সেখানে মাথা বাঁচাতে পারেন।’’
শ্যামবাজারে টানা অবস্থান চলছে সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠনের। সেখান থেকে পালা করে লালবাজারের কাছে অবস্থানে এসেছিলেন যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির রাজ্য সম্পাদক কনীনিকা ঘোষেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy