E-Paper

আধিকারিকদের ‘ভাল’ কাজের অর্থ পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলাবে না তো? চর্চা প্রশাসনের অন্দরে

আধিকারিক মহলের অনেকের প্রশ্ন, কমিটি গঠিত হলে তাঁদের মূল্যায়ন যথাযথ হবে তো? কোনও কাজকে কী অর্থে ‘ভাল’ বলে ধরা হবে, তা নিয়েও চর্চা চলছে।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ০৯:০৪
Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

‘ভাল’ কাজের অর্থ পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলাবে না তো? আধিকারিকদের কাজের মূল্যায়নে কমিটি গড়ার প্রস্তুতি ঘিরে এই চর্চাই শুরু হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

লোকসভা ভোটের পর থেকে নিয়মিত প্রশাসনের অন্দরের নানা খামতি ধরে ভর্ৎসনা এবং সতর্কবার্তা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রে পুলিশকর্তাদের নিয়ে কমিটি গড়ে আধিকারিকদের কাজের স্বচ্ছতা যাচাই করার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু আধিকারিক মহলের অনেকের প্রশ্ন, কমিটি গঠিত হলে তাঁদের মূল্যায়ন যথাযথ হবে তো? কোনও কাজকে কী অর্থে ‘ভাল’ বলে ধরা হবে, তা নিয়েও চর্চা চলছে। যদিও প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার দাবি, ‘‘এখন এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। কমিটি গঠিত হলে এবং তার করণীয় লিখিত ভাবে স্থির হলে তখন তা বোঝা সম্ভব।’’

প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকের মতে, শুধু পুলিশ বা দুর্নীতিদমন শাখা নিয়ে গঠিত কমিটির পক্ষে কোনও দফতরের পদস্থ কর্তার কাজের পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন সম্ভব নয়। কারণ,
এক-একটি দফতরের কাজের প্রকৃতি এক-এক ধরনের। দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে তবেই প্রস্তাবিত কমিটি তা খতিয়ে দেখতে পারে। কিন্তু কাজের মূল্যায়ন করতে পারবেন একমাত্র সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাই। এক আধিকারিকের কথায়, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ যথাযথ ছিল, বা কোনও সেতু অথবা রাস্তা তৈরির নকশা সঠিক কি না, সেটা পুলিশ বা দুর্নীতিদমন শাখার পক্ষে ধরা সম্ভব নয়।” তাঁর সংযোজন, “আইএএস অফিসারদের মূল্যায়নে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি চালুই রয়েছে। জেলাশাসক-সহ বেশিরভাগ সিনিয়র অফিসারের বার্ষিক সেই প্রক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর মূল্যায়নই চূড়ান্ত। তা ছাড়া দুর্নীতি ধরার মতো পরিকাঠামো এমনিতেই রয়েছে সরকারের হাতে। তার যথাযথ প্রয়োগ হলেই অসাধু কাজ ঠেকানো সম্ভব।”

প্রসঙ্গত, ১১ জুনের মতো গত ২৪ জুনও পুলিশ এবং আধিকারিকদের একাংশের কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই। টাকা তোলার অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ মমতা জানিয়েছিলেন, অফিসারদের বদলির আগে কাজের মূল্যায়ন হবে। ভিজিল্যান্স, দুর্নীতিদমন শাখা, সিআইডি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং নিরাপত্তা অধিকর্তাকে নিয়ে গঠিত কমিটি সংশ্লিষ্টের কাজের স্বচ্ছতা খতিয়ে দেখবে। প্রসঙ্গত, পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও টাকা তোলার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী। আধিকারিকদের অনেকের প্রশ্ন, এমন ঘটনার তদন্তও কি ওই একই কমিটি করবে?

অন্দরের চর্চা উস্কে আধিকারিকদের অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চলতি বছরের গোড়ায় একটি প্রশাসনিক বৈঠকে ‘৫৬জে’ ধারার উল্লেখ করে আধিকারিকদের সতর্ক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, গত বছরের মাঝামাঝি লোকসভার লিখিত এক প্রশ্নের উত্তরে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট ধারায় ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১২২ জন আধিকারিককে বাধ্যতামূলক অবসরে (নির্দিষ্ট সময়ের আগেই) পাঠানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ওই ধারায় বলা রয়েছে, সরকার মনে করলে জনস্বার্থে কোনও পদস্থ কর্তাকে অবসর নিতে বাধ্য করতে পারে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee Nabanna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy