বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় টুইটারে যুদ্ধ হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর। সবকিছু পরিকল্পনা মতো চললে সেই যুদ্ধ এ বার দেখবে উত্তরবঙ্গের ধুপগুড়ি। জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে নিজ নিজ দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে যাওয়ার কথা দুই শিবিরের দুই সেনাপতির।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ধুপগুড়িতে উপনির্বাচন। তার আগে ২ সেপ্টেম্বর ধুপগুড়িতে প্রচারে যেতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। ওইদিন সেখানে তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের সমর্থনে একটি প্রচারসভা করবেন তিনি। দলের অন্যতম শীর্ষনেতাকে একেবারে শেষ লগ্নের প্রচারে এনে বাজিমাত করতে চাইছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী ৩১ অগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগদান করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাওয়ার কথা অভিষেকের। সেই বৈঠক সেরে কলকাতায় ফিরে তার পরদিনই ধুপগুড়িতে প্রচারে যেতে পারেন তিনি। গত রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরে আসার পর থেকে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেননি অভিষেক। তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ২৮ অগস্ট, সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসের মঞ্চ থেকেই আবার তাঁকে ‘স্বমহিমায়’ রাজনীতির আঙিনায় দেখা যাবে।
আরও পড়ুন:
তবে বিজেপি অভিষেকের ‘পাল্টা’ শুভেন্দুকে ধুপগুড়িতে প্রচারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এখন বিধানসভার বাদল অধিবেশন নিয়ে ব্যস্ত। তাই তাঁর দফতরের সঙ্গে পরামর্শ করেই ধুপগুড়িতে শুভেন্দুর প্রচারসূচি তৈরি করা হয়েছে। ৩০ অগস্ট রাখি পূর্ণিমা উপলক্ষে বিধানসভার অধিবেশন ছুটি। তাই ওইদিন তাঁকে ধুপগুড়ির প্রচারে কাজে লাগানো হবে। ওইদিন ধুপগুড়ির বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়ের সমর্থনে একটি প্রচারসভার পাশাপাশি একটি রোড শো করবেন শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, সময় পেলে ৩ সেপ্টেম্বর রবিবারেও প্রার্থীর হয়ে প্রচারে যাবেন তিনি। ওইদিনই উপনির্বাচনে প্রচার শেষ।
ঘটনাচক্রে, বিধানসভার বাদল অধিবেশনের প্রথম পর্বে যোগ দিতে এসে কলকাতায় অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হন ধুপগুড়ির বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়। তাঁরই শূন্য আসনে অকাল ভোট হচ্ছে ধুপগুড়িতে। ওই আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি।
বাংলার রাজনীতি অভিষেক-শুভেন্দুর টুইটার যুদ্ধের পর ধুপগুড়ির ময়দানের যুদ্ধ দেখতে আগ্রহী। বুধবার একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই বিবৃতিতে অভিষেকের নাম উল্লেখ করে। তা নিয়েই টুইট-পাল্টা টুইটে তরজায় জড়ান অভিষেক-শুভেন্দু। সেই তরজা চলতে চলতেই ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ছোঁয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ চলে আসে। সফল অবতরণের পর দুই শিবিরের দুই নেতার টুইট-যুদ্ধ কিছুক্ষণের জন্য থামে। পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থামিয়ে দুই নেতা অভিনন্দন জানান ইসরোকে। কিন্তু তার পর আবার শুরু হয় সমাজমাধ্যমে যুদ্ধ। তবে রাতের দিকে সেই যুদ্ধে বিরতি টানে দু’পক্ষই। অনেকে মনে করছেন, সেই যুদ্ধেরই পরবর্তী পর্যায় হতে চলেছে ধুপগুড়ির উপনির্বাচনের ময়দানে।