Advertisement
E-Paper

কুণালের বরাদ্দ হা রে রে, ধাঁই ধাঁই আসিফের

হা রে রে বদলে গিয়েছে ধাঁই ধাঁই শব্দে। কুণাল ঘোষের মুখ চাপা দিতে এক সময় নিয়মিত হা রে রে রে আওয়াজ তুলত পুলিশ। আসিফ খানের বেলায় তারা গাড়িতে চাপড় মেরে ধাঁই ধাঁই শব্দ করা শুরু করেছে। মঙ্গলবার শিয়ালদহে আদালতে এমনটাই দেখা গেল। ভাবগতিক দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই মনে হচ্ছে, সারদার মামলার সৌজন্যে কলকাতা পুলিশের কাজের তালিকায় নতুন সংযোজনই ঘটে গিয়েছে বুঝি। নানাবিধ আওয়াজ করে অভিযুক্তের কণ্ঠস্বর চাপা দিতে মোতায়েন রাখা হচ্ছে ধ্বনি-পুলিশ!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৪:২২
শিয়ালদহ কোর্টে আসিফ খান। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

শিয়ালদহ কোর্টে আসিফ খান। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

হা রে রে বদলে গিয়েছে ধাঁই ধাঁই শব্দে।

কুণাল ঘোষের মুখ চাপা দিতে এক সময় নিয়মিত হা রে রে রে আওয়াজ তুলত পুলিশ। আসিফ খানের বেলায় তারা গাড়িতে চাপড় মেরে ধাঁই ধাঁই শব্দ করা শুরু করেছে। মঙ্গলবার শিয়ালদহে আদালতে এমনটাই দেখা গেল।

ভাবগতিক দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই মনে হচ্ছে, সারদার মামলার সৌজন্যে কলকাতা পুলিশের কাজের তালিকায় নতুন সংযোজনই ঘটে গিয়েছে বুঝি। নানাবিধ আওয়াজ করে অভিযুক্তের কণ্ঠস্বর চাপা দিতে মোতায়েন রাখা হচ্ছে ধ্বনি-পুলিশ!

এক কালে মৃতদের জন্য শোক করতে বড়লোকেরা রুদালি ভাড়া করে আনতেন। আদালত চত্বরে আওয়াজ তোলার জন্য হাজির থাকছেন খাকি উর্দি পরা পুলিশ-কর্মীরাই। কারণ, আদালতে ঢোকা-বেরোনোর সময়ে কোনও ভাবেই মুখে লাগাম পরানো যাচ্ছে না সাংসদ কুণাল ঘোষ বা প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আসিফ খানকে। কখনও তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ‘ডাকাতরানি’ বা সারদার ‘সব চেয়ে বেশি সুবিধাভোগী’ বলে তোপ দাগছেন, কখনও আক্রমণ শানাচ্ছেন মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে। তাঁদের এই কথা সংবাদমাধ্যমে এসে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকারের। আর তাই প্রয়োজন পড়েছে ‘আওয়াজ করিয়ে’ পুলিশের।

মঙ্গলবার তাঁরাই গাড়ি চাপড়ে চাপা দিতে চেয়েছেন আসিফের গলা। তার মধ্যেও যেটুকু শোনা গিয়েছে, তাতে আসিফ দাবি করেছেন, “আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।” কে ষড়যন্ত্র করছে? আসিফের উত্তর, “রাজ্য সরকার।” এর পরেই টেনে-হিঁচড়ে আসিফকে পুলিশ লক-আপে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

রাজ্য সরকার কি সত্যিই এ রকম যড়যন্ত্র করছে? এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার মন্তব্য, “রাজ্য সরকার কী করে ষড়যন্ত্র করবে? তা হলে তো মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়।” তা হলে কি কুণাল, আসিফদের মুখ বন্ধ করার জন্য ধ্বনি-পুলিশ আনার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভারই? এই প্রশ্নের আর কোনও জবাব মেলেনি তাঁর কাছ থেকে। প্রশ্ন শুনে ওই শীর্ষকর্তার তির্যক মন্তব্য, “কার মাথা থেকে যে এই উর্বর আইডিয়া বের হয়েছে! এ বার তো ওঁরা মহিলা পুলিশ নিয়ে গিয়ে উলু দেওয়াবেন!”

এ দিন শিয়ালদহ আদালতে আসিফকে নিয়ে আসা হয় বেলা তিনটে নাগাদ। সেখানে প্রথমেই আসিফ খানের আইনজীবী লোকেশ শর্মা বিচারক অর্পিতা ঘোষকে বলেন, আসিফের বাড়িতে পুলিশ যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে, তাতে কোনও বিচারকের অনুমোদন ছিল না। একই সঙ্গে ওই আইনজীবীর দাবি, পুলিশের তল্লাশির সময়ে আসিফ বাধা দেননি বা হুমকি দেননি। এ নিয়ে বেনিয়াপুকুর থানার তদন্তকারী অফিসার প্রণব মিত্র যে অভিযোগ করেছেন, তা একেবারেই মিথ্যা বলে দাবি করেন লোকেশবাবু। আসিফকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আবেদনও জানান তিনি।

অভিযোগ উড়িয়ে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, পুলিশকে প্রথমে বাধা দিয়েছিলেন আসিফ। পরে পুলিশকে হুমকি, গালিগালাজও করেছেন তিনি। আসিফের জামিনের বিরোধিতাও করেন অভিজিৎবাবু। দু’পক্ষের যুক্তি শোনার পরে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসিফের জামিন নাকচ করে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। তবে এজলাসের মধ্যে আসিফ কোনও কথা বলেননি।

kunal ghosh asif khan saradha scam attacked state govt mamata banerjee tmc state news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy