কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতদের পরিবারের লোকজন।—ফাইল চিত্র।
সংগ্রামপুরের পরেও এ রাজ্যে যে চোলাই ব্যবসায় বিন্দুমাত্র ঘাটতি হয়নি তার প্রমাণ মিলল নদীয়ার শান্তিপুরে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত বিষমদ খেয়ে প্রাণ গেল দশ জনের। এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৯ জন।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মৃতদের পরিবার পিছু ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সাসপেন্ড করা হয়েছে আবগারি দফতরের ১১ জন কর্মীকে। তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে সিআইডির হাতে। যদিও রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্তাদের দাবি, ওই চোলাই মদ এ রাজ্যে তৈরি হয়নি। ঝাড়খণ্ড থেকে চোরা পথে এসেছে ওই মদ।
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে। শান্তিপুর থানার নৃসিংহপুর চৌধুরী পাড়ায় বসতি প্রচুর ইটভাঁটা শ্রমিক এবং দিনমজুরের। সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকে অসুস্থ হতে শুরু করেন। অনেকেরই পেট ব্যথা, শরীরে জ্বালা এবং চোখ জ্বালার মত উপসর্গ দেখা দেয়। পরিস্থিতি খারাপ হতে তাঁদের অনেকেই শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসেন। উপসর্গ দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। তাঁদের কাছে এর পর রোগীরা স্বীকার করেন যে তাঁরা সন্ধ্যা বেলায় চোলাই মদ খেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বছরের পর বছর শিকল বেঁধে ধর্ষণ, স্বাভাবিক হতে ১৫ বছর লাগল ওরাংওটাংয়ের!
আরও পড়ুন: শিখ বিরোধী দাঙ্গায় দোষী ৮৮ জনের শাস্তি বহাল রাখল দিল্লি হাইকোর্ট
রাতেই মৃত্যু হয় তিনজনের। ইতিমধ্যে হাসপাতালে রোগীর ভিড় বাড়তে থাকে। বুধবার সকালে মৃত্যু হয় আরও চারজনের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে গঙ্গার ঠিক উল্টোদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনাতেও কয়েকজন বিষ মদ খেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ এবং আবগারি দফতরের কর্তারা। প্রাথমিক তদন্তে ওই জায়গায় কোনও মদের ভাঁটি বা মদ তৈরির কোনও হদিশ মেলেনি। স্থানীয়রা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, চন্দন মাহাতো নামে এক যুবক ওই এলাকায় চোলাই মদের ব্যবসা করে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দন মাহাতো নামে এক ব্যক্তি ওই এলাকায় চোলাই মদের ব্যবসা করে। ঘটনার পর থেকেই ফেরার চন্দন। স্থানীয়রা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, গঙ্গার অন্যপাড় থেকে ওই মদ নৌকো করে নিয়ে আসত চন্দন। পুলিশ চন্দনের বাড়িতে হানা দিলে দেখা যায়, চন্দনের মা-ও ওই মদ খেয়ে অসুস্থ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে চন্দনের বোন-সহ দু’জনকে।
বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ এবং আবগারি দফতরের কর্তারা।—নিজস্ব চিত্র।
গোটা ঘটনায় আবগারি দফতরের বড়সড় ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে জেলা প্রশাসন। আবগারি দফতরের দুই অফিসার-সহ ১১ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি অন্য জেলাতেও শুরু হয়েছে চোলাই বিরোধী অভিযান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy