Advertisement
E-Paper

গরুর ট্রাক ধরালেন সাংসদ, প্রতিবাদে অবরোধ

ভাগ্যিস গরু-বোঝাই ট্রাক পথ আটকানোয় খেপে উঠেছিলেন সাংসদ। তাই পুলিশও কার্যত স্বীকার করতে বাধ্য হল, কোনও অনুমতি ছাড়াই অবাধে চলে গরুর ট্রাক। তিনটি ট্রাকের ৯১টা গরুও আটকাল পুলিশ।

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৩:২৭

ভাগ্যিস গরু-বোঝাই ট্রাক পথ আটকানোয় খেপে উঠেছিলেন সাংসদ। তাই পুলিশও কার্যত স্বীকার করতে বাধ্য হল, কোনও অনুমতি ছাড়াই অবাধে চলে গরুর ট্রাক। তিনটি ট্রাকের ৯১টা গরুও আটকাল পুলিশ। তার পরেই শুরু হল অন্য খেলা। কেন গরু আটক করা হল, তার প্রতিবাদে অবরোধ, বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত-বসিরহাট সংলগ্ন এলাকা।

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে। মধ্যমগ্রাম হয়ে বাদু রোড ধরে বাড়ি ফিরছিলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অভিযোগ, গরু বোঝাই তিনটি ট্রাক রাস্তা আটকে ঢিমেতালে যাচ্ছিল। সামনে ছিল একটি পুলিশ গাড়িও। সাংসদের দেহরক্ষীরা ট্রাকগুলিকে সরে যেতে বললে বচসা বাধে। কেন পুলিশ গরু পাচারকারীদের গাড়ি ‘পাহারা’ দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সে প্রশ্ন তোলেন কাকলিদেবী। তিনি জেলার পুলিশ কর্তাদের ফোনও করেন। এরপরেই মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ তিনটি গাড়ি এবং ৯১টি ছোট-বড় গরু আটক করে। গ্রেফতারও হয় কয়েক জন। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ গাড়ি গরুর গাড়িকে ‘এসকর্ট’ করছিল না। ওটা ছিল মধ্যমগ্রাম থানার টহলদারি পুলিশ গাড়ি।

কাকলিদেবী সোমবার বলেন, ‘‘রাস্তায় গরু বোঝাই গাড়ি দেখে আমি পুলিশকে জানাই। এরপরে পুলিশই ব্যবস্থা নেয়।’’ তিনি মনে করাচ্ছেন, দিনকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ সফরে দিয়ে গরু পাচার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনকে। অন্য দিকে পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় গরু ও ট্রাক আটক করা হয়েছে।’’ কিন্তু কাকলিদেবীআপত্তি না জানানো পর্যন্ত পুলিশ অপেক্ষা করল কেন? টহলদারি গাড়ি কেন আগেই আটক করেনি ট্রাকগুলিকে? সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

সোমবার সকাল হতেই গোলাবাড়ি, বেড়াচাঁপা, মাটিয়ার মতো এলাকায় দফায় দফায় বারাসত-টাকি রোড অবরোধ করা হয়। আব্দুল সালাম, মহম্মদ বাদশা, শেখ শইফুল রহমানের মতো গোলাবাড়ি এলাকার বিক্ষোভকারীরা জানান, এলাকার বহু মানুষ গরুর মাংস ও কসাই ব্যবসায় জড়িত। বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বৈধ ভাবে গরু কিনে আনা সত্ত্বেও রাস্তায় পুলিশ নিজস্ব ‘টিকিট’-এর বিনিময়ে ‘নজরানা’ নেয়। সে সব মেটানো সত্ত্বেও মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ গরু আটক করেছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। শ্রীনগর-মাটিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রেমেন্দ্র মল্লিক বলেন, ‘‘প্রতিদিন থানার নাকের ডগা দিয়ে বাংলাদেশে গরু পাচার হলেও পুলিশ তা দেখতে পায় না। যত দোষ বৈধ ব্যবসায়ীদের গরুতেই।’’

গরু আটক এবং তার প্রতিবাদের বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে কাকলি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দ্বন্দের প্রসঙ্গও উঠে আসে। তবে এ নিয়ে এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Barasat MP Cow Trinamool police Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy