Advertisement
E-Paper

১৪ হাজার বাড়তি বুথ কোথায় কোথায়? সর্বদল বৈঠক সিইও দফতরে, এসআইআর নিয়ে কী আপত্তি তুলল তৃণমূল?

বর্তমানে রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৮০ হাজারের সামান্য বেশি। এর সঙ্গে আরও প্রায় ১৪ হাজার বুথ যুক্ত হলে মোট বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৯৪ হাজার। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যেই শুক্রবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন সিইও।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৫ ১৮:৩৩
All Party Meet in the office of  Chief Electoral Officer of West Bengal on delimitation of electoral booths

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভোটার বিন্যাসের পরিবর্তনের নিরিখে প্রায় ১৪ হাজার বুথ বাড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। বুথ বিন্যাসের বিষয়ে অবহিত করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুক্রবার সর্বদল বৈঠক করল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও)-এর দফতর। সিইও দফতর সূত্রে খবর, কোথায় কোথায় বুথ (ভোটগ্রহণ কেন্দ্র) হতে পারে সেই সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়াল জানান, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুথ বিন্যাস নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি অভিযোগ লিখিত আকারে জমা দিতে পারবে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

শুক্রবারের বৈঠকে তৃণমূলের পক্ষে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং সাংসদ পার্থ ভৌমিক। বৈঠকের পরে অরূপ বলেন, ‘‘বুথের পুনর্বিন্যাস নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমরা বলেছি, অতিরিক্ত বুথ যেন একই ভোটকেন্দ্রে হয়। ভোটারকে দু’কিলোমিটার দূরে গিয়ে যেন ভোট দিতে না হয়।’’ সেই সঙ্গে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন’ (এসআইআর)-নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের আবহে তাঁর মন্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে হবে। রেফারি যদি ঠিক না হয়, তবে কী ভাবে হবে! কোনও রাজনৈতিক দলকে সন্তুষ্ট করা যাবে না। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই বৈঠকে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি।’’

এসআইআর যাতে ভোটার তালিকা থেকে নামের ‘গণ নিষ্কাশনে’ পরিণত না হয়, ইতিমধ্যেই তা নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে অরূপের মন্তব্য, ‘‘কমিশন নিরপেক্ষতা বজায় রাখুক। আজকেই বৈঠকে এসআইআর নিয়ে কোনও অ্যাজেন্ডা ছিল না। পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর হবে না। এসআইআর -এর নাম করে কাউকে সুবিধা দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে ১০ লক্ষ লোক নিয়ে আমরা কমিশনে যাব।’’ প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার টিএমসিপির সমাবেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তালিকা থেকে কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ গেলে ১০ লক্ষ মানুষ নিয়ে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে গিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাবেন।

বর্তমানে রাজ্যে বুথের সংখ্যা ৮০৬৬১। এর সঙ্গে আরও ১৩৮১৬টি হাজার বুথ যুক্ত হলে মোট বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৪৪৯৭। রাজনৈতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, এর ফলে মাথাব্যথা বাড়বে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিরও। বিশেষত বিরোধীরা এসআইআর পর্বের সময় বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) দিতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ‘ভুয়ো’ এবং ‘অবৈধ’ ভোটারের রমরমা বলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি ধারাবাহিক ভাবে অভিযোগ তুলেছে। সম্প্রতি বিহারে এসআইআর খসড়া তালিকায় প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিজেপির দাবি, পশ্চিমবঙ্গেও লক্ষ লক্ষ ‘অবৈধ’ এবং ‘ভুয়ো’ ভোটার রয়েছে।

শুক্রবার কমিশনের বৈঠক শেষে বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া বলেন, ‘‘বুথ বিন্যাস নিয়ে ২৪টি জেলার ডিইও (জেলা নির্বাচনী আধিকারিক)-র ভাষা একই। তাঁরা বলেছেন, একটিও না কি অভিযোগ জমা পড়েনি। বামেরা বলেছে, সিইও বলছেন, সব ডিইও কী ভাবে একই রিপোর্ট দেয়? বিরোধীদের কোনও কথা শুনবে না কমিশন। এই রকম পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন নিয়ে নিরপেক্ষ ভোট হওয়া সম্ভব?’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘৪০ শতাংশের বেশি বুথে বুথ লেভেল অফিসার করা হয়েছে। পাঁচ গুণের বেশি সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। তার পরেও কেন অস্থায়ী বিএলও? এই বিষয়ে আমরা কমিশনকে জানাব।’’ শিশিরের অভিযোগ, তৃণমূলের অফিস থেকে বিএলও নিয়োগের নাম নিয়ে আসা হয়।

সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘২০২১ সালে ভোট পরবর্তী হিংসা হয়েছিল। সেখানে সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়েছে, সে সব বুথে ভোট করানো যাবে না।’’ এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এসআইআর-এর কথা উঠতে শাসকদলের নেতারা রে রে করে উঠলেন। ২০২৬ সালে হলে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকবে না। এর আগে ১৩ বার এসআইআর হয়েছে। এর আগে ২০০২ সালে ২৮ লক্ষ লোকের নাম বাদ গিয়েছিল তখন তো কিছু বলেলনি।’’ কংগ্রেসের পক্ষে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, খাজা আহমেদ, মৃণাল নস্কর ‘নো পলিটিক্যাল এসআইআর’ পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকের পর আশুতোষ বলেন, ‘‘অসম্পূর্ণ বৈঠক। বুথ বিন্যাস কোনও অভিযোগ নেই এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। দক্ষিণ কলকাতার ১৫৫-১৫৮ নম্বর বুথে সাইকেল স্ট্যান্ডে ভোট হয় কেন? কয়েক জন ডিইও তৃণমূলের কথায় কাজ করছেন। দলের মুখপাত্রের মতো কথা বলবেন না।’’

Election Commission of India all party meeting Voter List Controversy TMC vote booth
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy