Advertisement
০৪ মে ২০২৪

রাখির দিনে দলের নেতাকে জুতো নিয়ে তাড়া বিধায়কের

জুতো হাতে দলেরই নেতার দিকে তেড়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের মহিলা বিধায়ক। পালাচ্ছেন নেতা। তার পরে তাঁর অনুগামীরা ঘেরাও করছে বিধায়ককে। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। রাখি উৎসবকে ঘিরে বৃহস্পতিবারের বারবেলায় এমনই দৃশ্যের সাক্ষী বর্ধমানের মেমারি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৫
Share: Save:

জুতো হাতে দলেরই নেতার দিকে তেড়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের মহিলা বিধায়ক। পালাচ্ছেন নেতা। তার পরে তাঁর অনুগামীরা ঘেরাও করছে বিধায়ককে। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। রাখি উৎসবকে ঘিরে বৃহস্পতিবারের বারবেলায় এমনই দৃশ্যের সাক্ষী বর্ধমানের মেমারি।

সন্ধ্যায় মেমারি থানায় বিধায়ক নার্গিস বেগমের নামে মারধরের অভিযোগ করেন তৃণমূলের ওই নেতা, দলের বিজুর ২ অঞ্চল সভাপতি দীনবন্ধু ঘোষ। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে নার্গিসের দাবি, ‘‘এমন ঘটনা ঘটেনি।’’

শাসক দলের উদ্যোগে মেমারি ২ ব্লকের রাখি উৎসব হয় দু’ভাগে। একটা হয় কুচুট অ়়ঞ্চলে, অন্যটি পাহাড়হাটিতে পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে। কুচুটের অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন টিএমসিপি-র (তৃণমূল ছাত্র পরিষদ) ব্লক সভাপতি কেরামত আলি। তিনি এলাকায় দীনবন্ধু-অনুগামী বলে পরিচিত। দীনবন্ধু শিবিরের ক্ষোভ, বিধায়ক ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল বাগ কুচুটের অনুষ্ঠানে পৌঁছতেই সভামঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলা হয় কেরামতকে। দলের ভিতরের রাজনীতিতে কেরামত ভিন্ন গোষ্ঠীর লোক বলেই ওই কাণ্ড। পরে অমলবাবু যান পাহাড়হাটির অনুষ্ঠানে। সেখানে দীনবন্ধুর লোকেরা তাঁকে ঘেরাও করে। অমলবাবু ফোন করেন নার্গিস বেগমকে। তিনি আসেন। তার পরেই ‘ধুন্ধুমার’।

দীনবন্ধুবাবুর অভিযোগ, “কেন অমলবাবুকে ঘেরাও করা হয়েছে না শুনেই বিধায়ক আমাকে পদ থেকে তাড়িয়ে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। গালে চড় মারেন।’’ উত্তেজিত নার্গিস জুতো হাতে তাঁর দিকে তেড়ে যান বলেও দাবি দীনবন্ধুর।

ঘটনাস্থলে হাজির তৃণমূল কর্মীদের অভিজ্ঞতা, বিধায়ক তাড়া করতেই দীনবন্ধুবাবু সেখান থেকে চলে যান। কিন্তু কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর অনুগামী দু’-আড়াইশো লোক ঝাঁটা-বটি হাতে পঞ্চায়েত সমিতির দফতর ঘিরে ফেলে। দফতরে ঢুকতে গিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য বাপি হাঁসদা দীনবন্ধুবাবুর অনুগামীদের হাতে মার খান বলে অভিযোগ। শেষে পুলিশ আসে। ছাড়া পান বিধায়ক।

নার্গিস বেগমের অবশ্য দাবি, ‘‘ঘটনা শুনে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরে গিয়ে সবাইকে চলে যেতে বলি। আর কিছু হয়নি।’’ কিন্তু তাঁর দলেরই নেতা পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ মহসিন মণ্ডলের ক্ষোভ, “এক জন মহিলা বিধায়ক সকলের সামনে জুতো হাতে দলেরই এক নেতার দিকে তেড়ে যাচ্ছেন— এমন দৃশ্য দুঃস্বপ্নেও ভাবা যায় না!’’

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব ভুলে কাজ করার বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে রাখি উৎসবের মতো অনুষ্ঠান ঘিরে এমন ঘটনা কতটা অভিপ্রেত? দলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ, সভাধিপতি দেবু টুডুরা দাবি করেছেন, ঘটনাটি জানেন না। তাই মন্তব্য করবেন না। তবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল বাগের মন্তব্য, ‘‘ছাড়ুন না। এখন মিটে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE