Advertisement
E-Paper

কোচবিহারে অভিযোগের কেন্দ্রে সেই রবীন্দ্রনাথ

বিরোধী দলের কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়া, ভোটারদের প্রভাবিত করা, বিরোধীদের ক্যাম্প-অফিসে হামলা, ভাঙচুর, বুথ-জ্যাম, প্রার্থী, এজেন্টদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে ভোটের দিনও সরগরম রইল কোচবিহার। অভিযোগের কেন্দ্রে রইলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসায় সন্ত্রাসের আশঙ্কায় শুক্রবার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২৮
ভোটকেন্দ্রের বাইরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

ভোটকেন্দ্রের বাইরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

বিরোধী দলের কর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়া, ভোটারদের প্রভাবিত করা, বিরোধীদের ক্যাম্প-অফিসে হামলা, ভাঙচুর, বুথ-জ্যাম, প্রার্থী, এজেন্টদের বুথ থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে ভোটের দিনও সরগরম রইল কোচবিহার। অভিযোগের কেন্দ্রে রইলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী না আসায় সন্ত্রাসের আশঙ্কায় শুক্রবার সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা।

শনিবার ভোট মেটার পরে
তাঁরা বলছেন, ‘‘ষড়যন্ত্র করে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। রবিবাবু আগেই দলের নেতা-কর্মীদের বলেছিলেন, ভোটটা করাতে সব রকম সাহায্য করবেন। প্রশাসনকেও ব্যবহার করবেন। সেটা নেহাত কথার কথা
ছিল না।’’

যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেছেন, ‘‘সব মিথ্যে কথা। ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হয়েছে।’’ কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন এবং পুলিশ সুপার রাজেশ যাদবও দাবি করেছেন, ‘‘কোথাও কোনও গণ্ডগোল হয়নি।’’

বিরোধীদের অভিজ্ঞতা অবশ্য তেমন নয়। বামেদের অভিযোগ, দিনহাটার ১ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের একটি ক্যাম্প-অফিস ভেঙে দেয় শাসক দলের কর্মীরা। তুফানগঞ্জে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএমের এক কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। তুফানগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী রমেশচন্দ্র সরকার এবং এজেন্ট বাদল পালকে বুথ থেকে বার করে দেওয়া হয়। ওই পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বুথ-জ্যাম করায় অভিযুক্ত শাসক দল।

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অনন্ত রায়ের কথায়, “বহিরাগত এনে গণ্ডগোলের ছক কষে মাঠে নেমেছিল শাসক দল।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ এ বার দিনহাটার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী। সকাল থেকেই বসেছিলেন বুথের সামনে। সেখানেও বহিরাগতদের ভিড় নজরে এসেছে বলে দাবি এই বাম নেতার।

গুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে বিজেপি-রও। কোচবিহারে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের এজেন্টকে বুথ থেকে বার করে দেওয়া, ওই পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী কমল মজুমদারকে হুমকি দেওয়া, দিনহাটার ১৬ নম্বর এবং মাথাভাঙার একাধিক ওয়ার্ডে বুথ-জ্যাম করে দেওয়ায় অভিযুক্ত শাসক দল। বিজেপি-র দাবি, পুলিশ সেখানে ছিল দর্শকের ভূমিকায়। বিজেপি-র জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, “পেশিশক্তির ব্যবহার করেছে শাসক দল। সবটাই পূর্ব পরিকল্পিত।’’ তবে
পুলিশ সুপার নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানেননি।

বিরোধীরা বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রচার-পর্ব চলাকালীন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সামনে দলের নেতা-কর্মীদের ‘ভোটটা করানোর’ প্রক্রিয়া বাতলে দিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এ দিন ভোর সাড়ে ৬টা থেকে দিনভর গাড়ি নিয়ে তাঁকে জেলার সর্বত্রই ভোট-তদারক করতে দেখা গিয়েছে। কোচবিহার পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হিন্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি নিজে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন বলেও অভিযোগ। সেই সূত্র টেনে যাবতীয় সন্ত্রাসের অভিযোগের পিছনে ‘রবিবাবুর অবদান’ দেখছেন বিরোধীরা।

ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ মানেননি রবীন্দ্রনাথবাবু। বলেছেন, ‘‘কোনও বুথে যাইনি। বুথের সামনে রাস্তা দিয়ে গিয়েছি। তাতে ভোটারদের প্রভাবিত করা হয় না।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘বাম আমলে ভোট-সন্ত্রাসের কথা সবাই জানে। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মানুষ শান্তিতে ভোট দিতে পারছেন। ভোট করাতে প্রশাসনিক মদতের কথা নয়, আমি বলতে চেয়েছিলাম প্রশাসন মানুষকে নিশ্চিন্তে ভোট দিতে সাহায্য করবে। এ দিন ঠিক তা-ই হয়েছে।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এ জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন অনুভব করলে রাজ্য সরকার কি আর তা দিত না!’’

Cooch behar Trinamool Rabindranath Ghiosh municipal election BJP Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy