—ফাইল চিত্র।
একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ উঠছে এক ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে। বছর পাঁচেক আগে ‘কান্ট্রি ভেকেশন ক্লাব’ নামে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়ে। ওই সংস্থাই ‘কান্ট্রি ক্লাব’ নামেও পরিচিত। তখন ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে অভিযুক্ত ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ থেমে নেই। এ বার ওই ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আদালত পর্যন্ত গড়াল। সম্প্রতি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত একটি মামলায়
ওই ভ্রমণ সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
তপসিয়া ও রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে ‘কান্ট্রি ক্লাব’-এর দু’টি অফিস রয়েছে। পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ করার পরেও কোনও সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় বছর ছয়েক আগে কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন ডায়মণ্ডহারবার রোডের বাসিন্দা সরোজকুমার দস্তিদার। জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে তিনি জানিয়েছিলেন, এক লক্ষ দশ হাজার টাকার সদস্যপদ গ্রহণ করার জন্য প্রথম কিস্তিতে ওই সংস্থাকে তিনি পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তাঁকে বলা হয়েছিল, কসবার ক্লাবে শারীরচর্চার সুবিধা ছাড়াও বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, প্রথম কিস্তিতে টাকা দেওয়ার পরে কসবার ওই ক্লাবে গিয়ে দেখেন, জিমের কোনও সুবিধাই সেখানে নেই। তাঁর অভিযোগ, সবটাই ছিল বিজ্ঞাপনী চমক। দিনের পর দিন কান্ট্রি ক্লাবের অফিসে গিয়ে কোনও লাভ হয়নি। টাকা ফেরত দিতে বললে সংস্থার তরফে কর্ণপাত করা হয়নি বলে সরোজবাবু অভিযোগ করেছেন। টাকা ফেরত না পাওয়ায় সরোজবাবু প্রথমে কলকাতা জেলা ক্রেতা আদালতে মামলা করেন। কলকাতা জেলা ক্রেতা আদালত অভিযুক্ত ভ্রমণ সংস্থাকে পঁয়ত্রিশ হাজার টাকা-সহ মামলার খরচ বাবদ অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়।
এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন কান্ট্রি ক্লাব কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক শ্যামল গুপ্ত জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়কেই বহাল রেখে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৭০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত ‘কান্ট্রি ক্লাব’-এর কলকাতা শাখার কাস্টমার কেয়ার ম্যানেজার মহম্মদ ইকবাল বলেন, ‘‘আদালতের রায় মেনে আমরা মামলাকারীকে শীঘ্রই টাকা ফেরত দেব।’’ সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কেন? জবাবে ইকবাল বলেন, ‘‘আগামী দিনে এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সচেষ্ট হব।’’ ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অব ই়ন্ডিয়ার পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি বলেন, ‘‘যে কোনও ভ্রমণ সংস্থার সদস্য হওয়ার আগে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষত, ওই সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএটিএ)-এ নথিভুক্ত কি না, তা পর্যটকদের খতিয়ে দেখতে হবে।’’ অনিলবাবু বলেন, ‘‘কান্ট্রি ভেকেশন ক্লাব আমাদের সংস্থার অন্তর্ভুক্ত নয়।’’ বারবার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও ওই সংস্থা পার পেয়ে যাচ্ছে কেন? উত্তরে ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে কান্ট্রি ভেকেশন ক্লাবের বিরুদ্ধে একের পর অভিযোগ আসছে। এবার আমরা কান্ট্রি ভেকেশন ক্লাবের বিরুদ্ধে ১২ (১) ডি ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy