শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
জমি দখলের অভিযোগ এ বার শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ সন্দেশখালি থানার বেড়মজুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের হাজি সিদ্দিক মোল্লার বিরুদ্ধে। আট বছর ধরে পাঁচ বিঘা জমি দখল করে রাখার পাশাপাশি স্থানীয় রামপুর আরএফপি স্কুলের জমি দখল করে ছেলের জন্য দোকানঘর তৈরি করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার সকালে পঞ্চায়েত প্রধান পাঁচ বিঘা জমি দখল করে রেখেছেন— এই অভিযোগে রামপুর বাগদি পাড়া মোড় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা সবুর আলি লস্কর, সখের আলি লস্কর, হানিফ লস্কর-সহ অনেকেই দাবি করেন, তাঁদের পূর্বপুরুষ মিনাখাঁর বাসিন্দা ওয়ারেশ আলি জমাদারের পাঁচ বিঘা জমির ভাগ চাষি ছিলেন। এই জমি ধীরে ধীরে মালিকের কাছ থেকে ভাগ চাষিরা কিনে নেন। আগে এখানে ধান চাষ হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে মাছ চাষ হচ্ছিল। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ হাজি সিদ্দিক মোল্লা এই জমি দখল করে নেন।
সবুর আলি লস্কর বলেন, “এত দিন ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। বিভিন্ন মহলে জানিয়েছিলাম, কাজ হয়নি। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। তাই সবাই আলোচনা করে জমির দখল নিতে গিয়েছিলাম। তখনই সিদ্দিক মোল্লা ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে বচসা হয়।” পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। অভিযোগকারীরা সন্দেশখালি থানা, বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “এটা সরকারি জমি। অবৈধ ভাবে এই জমি দখল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
অন্য দিকে, সরকারি জমি দখল করে এই অভিযুক্তই ছেলেকে দোকানঘর করে দিয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রামপুর আরএফপি স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। অভিযোগ, ২০২০ সালে লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন বেড়মজুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া রামপুর আরএফপি স্কুলের ফাঁকা জমি দখল করে পোশাকের দোকান করেন তৃণমূল প্রধানের ছেলে। এর পরে সেখানে ফোনের দোকান হয়। স্কুল সূত্রে খবর, সেখানে মিড-ডে মিলের রান্নাঘর তৈরি হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষকেরা জানান, শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ এই প্রধানের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস ছিল না কারও। তাই অভিযোগ জানাতে পারেননি কেউই। সেই সুযোগে বিনা বাধায় শো-রুমের ধাঁচে গড়ে ওঠে ওই দোকানঘর। সন্দেশখালি ২-এর স্কুল পরিদর্শক নবকুমার রায় বলেন, “আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি এখনও। করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।” বিডিও সন্দেশখালি-২ অরুণকুমার সামন্তও বলেছেন, “অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।”
এ ক্ষেত্রেও তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, “ছেলের দোকানটা পূর্ত দফতরের জায়গায়, স্কুলের নয়। আরও অনেকে করেছে বলে আমিও করেছিলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy