Advertisement
০৫ মে ২০২৪
sandeshkhali

সেই সন্দেশখালি! হুমকিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বুথে গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন সুশীল খরবিন। তখন তিনিই ওই স্কুলের গ্রামশিক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

tmc

—প্রতীকী ছবি।

নবেন্দু ঘোষ 
ন্যাজাট শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৫
Share: Save:

ফের সন্দেশখালি! ফের এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ! নিয়ম ভেঙে প্রাথমিক স্কুলের গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি হতে হুমকি দেওয়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রধান শিক্ষক। সন্দেশখালি ১ বিডিও সায়ন্তন সেন বলেন, ‘‘শিক্ষাকেন্দ্রে কোনও অন্যায় সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ ন্যাজাট থানা জানিয়েছে, শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে
দেখা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল ন্যাজাট থানার হাটগাছি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কানমারি সুমিত্রাবালা প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি পঞ্চায়েতের ৫৮ নম্বর বুথের মধ্যে পড়ে। ওই বুথে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মৌসুমী মণ্ডল। নিয়ম অনুযায়ী, স্কুলের গ্রামশিক্ষা কমিটির সভাপতি হওয়ার কথা মৌসুমীরই। তা নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত।

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বুথে গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন সুশীল খরবিন। তখন তিনিই ওই স্কুলের গ্রামশিক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ৫৮ নম্বর বুথ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় পাশের বুথ থেকে ভোটে দাঁড়ান সুশীল। কিন্তু স্কুলের পদ তিনি ছাড়তে চান না বলে অভিযোগ।

আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের পরে যত বার মৌসুমীকে নিয়ে গ্রামশিক্ষা কমিটি তৈরির চেষ্টা করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ, তত বারই সুশীল স্কুলে এসে অশান্তি করেছেন। প্রধান শিক্ষককে হুমকি, অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গালিগালাজ করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক ভারতচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সমস্যার কথা হাটগাছি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কাদের মোল্লা, স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাতোকেও জানিয়েছিলাম। উপপ্রধান আশ্বস্ত করেন। কিন্তু বাস্তবে সঙ্কট কাটেনি।’’

প্রধান শিক্ষক জানান, দিন কয়েক আগে স্কুলে মৌসুমীকে নিয়ে গ্রামশিক্ষা কমিটি তৈরির প্রক্রিয়া চলাকালীন নিজেকে স্কুলের স্বঘোষিত ‘অভিভাবক’ হিসেবে দাবি করে সেখানে হাজির হন সুশীল। তাঁকে বাদ দিয়ে কমিটি তৈরি করা হচ্ছে কেন, সে প্রশ্ন তুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত কমিটি তৈরি করা যায়নি। একাধিকবার বাধা পেয়ে মৌসুমীও বলেন, ‘‘সুশীল যখন চাইছেন, উনিই সভাপতি হন।’’

স্কুল সূত্রের খবর, ২০১৪ সাল থেকে সুশীল ওই স্কুলে গ্রামশিক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘স্কুলে বার্ষিক যে কম্পোজিট গ্র্যান্ট বা অনুদান আসে, সেই টাকায় ওঁর নজর। তাই এত মরিয়া কমিটিতে ঢুকতে!’’ প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমার বাড়িতেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সুশীল। ভোট মিটলে দেখে নেবেন বলেছেন। বাধ্য হয়ে পুলিশকে জানিয়েছি।’’

অভিযুক্ত সুশীল খরবিনের দাবি, ‘‘সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখ-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে হুমকি ও দাদাগিরির অভিযোগের রেশ এখনও টাটকা। তার মধ্যেই এই ঘটনা সামনে আসায় শাসক দল তৃণমূলকে বিঁধেছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ বলেন, ‘‘শাহজাহানের মতো নেতারা গ্রেফতার হয়েছে। তা দেখেও শিক্ষা নিচ্ছেন না তৃণমূলের বাকি নেতারা। দাদাগিরি করার অভ্যাস থেকে গিয়েছে। ফল ভুগবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sandeshkhali TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE