রাজারহাটের চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোবারকপুরের মাঠপাড়ার একটি ভেড়িতে স্থানীয় এক যুবকের হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ ভেসে ওঠার ২৪ ঘণ্টা পরেও ঘটনার রহস্যভেদ হয়নি। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে রাজারহাট থানার পুলিশ।
গত সোমবার বিকেলে ওই ভেড়িতে মৃতদেহ ভাসতে দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতের নাম তৌহিদ রহমান সাঁপুই (২০)। রবিবারই ছিল তাঁর জন্মদিন। তাঁর দেহটি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ভেড়িতে ভাসছিল। মৃতের গলায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে, যা দেখে পুলিশের অনুমান, তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। দেহটি উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার দেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে বলে ধারণা পুলিশের।
পরিবার সূত্রের খবর, তৌহিদ সে ভাবে বাইরে কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। বাড়িতেই থাকতেন। সোমবার ভোরে একটি কাজে বেরোবেন বলে মায়ের কাছ থেকে আগেই বাড়ির গেটের চাবি নিয়ে রেখেছিলেন তিনি। ওই দিন সকালে উঠে পরিবারেরঅন্য সদস্যেরা দেখেন, ঘরে নিজের মোবাইল ফেলে রেখেইবেরিয়েছেন তৌহিদ। সে দিন বিকেলেই এলাকার একটি ভেড়ি থেকে তৌহিদের দেহ উদ্ধার করা হয়। ভেড়ির কাছেই পড়ে ছিল তৌহিদের সাইকেল।তাঁর বাবা জাহিরুল সাঁপুই পেশায় দর্জি। পরিবারের এক সদস্য জানান, রবিবার তৌহিদের জন্মদিন ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে তিনি জন্মদিনপালন করেছিলেন। তাঁর কাকা মোজাম্মেল সাঁপুই বলেন, ‘‘তৌহিদ বেশির ভাগ সময়ে বাড়িতেই থাকত। ওর এমন পরিণতি মেনে নেওয়া যায় না। দ্রুত তদন্ত করে কে বা কারা ঘটনার পিছনে রয়েছে, তা খুঁজে বার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’’
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান আক্রম আলি মোল্লা সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনি পঞ্চায়েতের একটি বৈঠকে ছিলেন। স্থানীয় এক জন দেহ উদ্ধারের খবর দেন তাঁকে। তিনি বিষয়টিপুলিশকে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘তৌহিদ খুব ভাল ছেলে ছিল।’’ পুলিশের কাছে তাঁর দাবি, খুনিদের অবিলম্বে খুঁজে বার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। এই ঘটনায়সোমবার রাতেই খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে, খুন কে বা কারা করেছে, সে ব্যাপারে পুলিশ এখনও অন্ধকারে। তৌহিদেরসঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কিনা, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। এর জন্য তৌহিদের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, দেহ উদ্ধারের সময়ে তৌহিদের হাত পিছনে বাঁধা ছিল। গলায় ছিল শ্বাসরোধের চিহ্ন। তৌহিদকে কেন খুন করা হল, তা জানার চেষ্টাকরছে পুলিশ।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা জানান, ঘটনাটির সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে পুলিশ। তৌহিদকে খুন করা হয়েছে বলেই অভিযোগ তাঁর পরিবারের। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় তৌহিদের পরিবার।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)