সংস্থায় আর্থিক কারচুপি চলছে, এমন অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছিলেন সেখানকার এক ডিরেক্টর। পদত্যাগী সেই ডিরেক্টরের সই জাল করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই সংস্থারই অন্য তিন ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে। ওই তিন অভিযুক্ত সম্পর্কে স্বামী, স্ত্রী এবং ছেলে। প্রতারণার এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার মুচিপাড়ার একটি হোটেল থেকে ভবানীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বৌবাজার থানার পুলিশ। শুক্রবার কলকাতার এসিজেএম (২) আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিশাখা চৌধুরী ধৃতকে ৩ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন। আর এক অভিযুক্ত ভবানীপ্রসাদের ছেলে পলাতক। ভবানীপ্রসাদের স্ত্রী কলকাতা হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, ভবানীপ্রসাদ ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে এই রকম একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে।’’ আদালত সূত্রের খবর, ভবানীপ্রসাদ, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে মিলে পুরুলিয়ায় একটি সংস্থা খুলেছিলেন। বৌবাজার এলাকাতেও ওই সংস্থার শাখা খোলা হয়। ২০১৮ সালে অভিযোগকারী জানতে পারেন, সংস্থায় আর্থিক দুর্নীতি চলছে। সেই বছরই তিনি ডিরেক্টরের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময়ে ভবানীপ্রসাদের সঙ্গে অভিযোগকারীর মউ স্বাক্ষরিত হয়। ঠিক হয়, ভবানীপ্রসাদ, তাঁর স্ত্রী ও ছেলে মিলে অভিযোগকারীকে মোট ১২ কোটি টাকা দেবেন। প্রতি মাসে তিন লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।
এর পরে ২০২৩ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের পুরুলিয়া শাখা থেকে নোটিস পান অভিযোগকারী। সেই নোটিসে বলা হয়, তিনি ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ সালে
লেটার অব গ্যারান্টি সই করে সংস্থার নামে কয়েক কোটি টাকা ওই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন। চারটি লেটার অব গ্যারান্টির মাধ্যমে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছে। এবং সেই ঋণ শোধও করা হয়নি।
এর পরেই আদালতের মাধ্যমে বৌবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অভিযোগকারী। তদন্তে উঠে আসে, লেটার অব গ্যারান্টিতে অভিযোগকারীর সই জাল করে ওই টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় ভবানীপ্রসাদকে। অরূপ জানান, ভবানীপ্রসাদের স্ত্রী এবং ছেলে আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন। হাই কোর্ট স্ত্রীর আবেদন মঞ্জুর করলেও ছেলেকে আগাম জামিন দেয়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)