E-Paper

জেলে বসেও মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ বন্দিদের, প্রশ্নে নজরদারি

বন্দিদশাতেও রামকৃষ্ণের মতো দুষ্কৃতীরা কী ভাবে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, জেলের এক শ্রেণির কর্তা ও কর্মীদেরযোগসাজশ ছাড়া এই দুষ্কর্ম সম্ভব নয়।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৩

—প্রতীকী চিত্র।

মাদক উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এ বার জেলে বসে আন্তঃরাজ্যমাদক চক্র চালানো হচ্ছে বলে জানতে পারলেন তদন্তকারীরা। সূত্রেরখবর, গত সোমবার তিনটি গাড়ি আটকে প্রায় তিন কোটি টাকার মাদক উদ্ধার করেন রাজ্যপুলিশের এসটিএফের তদন্তকারীরা। গ্রেফতার হয় সাত জন। তাদেরজেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাদক কারবারের মূল চক্রী, রামকৃষ্ণ কর্মকারের নির্দেশেই ওই মাদক কোচবিহার থেকে নিউ টাউনে নিয়ে আসা হয়েছিল। যা সরবরাহ করার কথা ছিল উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মাদক পাচারের অভিযোগে এসটিএফের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল রামকৃষ্ণ। তার পর থেকে সে দমদম জেলে বন্দি। গতবছর তাকে মাদক পাচারের অভিযোগে ১২ বছরের সাজাওদিয়েছেন বিচারক। অভিযোগ, তার পরেও জেলে বসেই সে ওই কারবার চালাচ্ছে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, নদিয়া-মুর্শিদাবাদ-উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় রামকৃষ্ণের নির্দেশে মাদক পৌঁছে যাচ্ছে। প্রয়োজনে তাকে ফেরহেফাজতে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

শুধু রামকৃষ্ণ নয়। জেলে বসে আরও কয়েক জন মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। তদন্তকারী গোয়েন্দাদের দাবি, দমদম জেলেই রয়েছে মাদকের দুই কারবারি, বাবা-ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে বিকাশ বিশ্বাস এবং অজয় বিশ্বাস। ২০২৩ সালে মাদক পাচারের আগে তারা গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে। তাদের জেরা করেই উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় মাদক তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। তার পর থেকেই জেলে রয়েছে বিকাশ ও অজয়। অভিযোগ, সম্প্রতি বেশ কয়েক জন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করার পরে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বিকাশ এবং অজয় উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, গাইঘাটা, নদিয়ার পলাশি, কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার, মালদহ জেলে বন্দি আর এক মাদক কারবারির নাম উঠে এসেছে গোয়েন্দাদের তদন্তে। অভিযোগ, তুহুর রহমান নামে ওই ব্যক্তি গোটা মালদহ-সহ মুর্শিদাবাদে নিজের সাম্রাজ্য চালাচ্ছে। জেল থেকেই তার নির্দেশে মাদক তৈরি করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে তার চক্রের সদস্যেরা।

বন্দিদশাতেও রামকৃষ্ণের মতো দুষ্কৃতীরা কী ভাবে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ, জেলের এক শ্রেণির কর্তা ও কর্মীদেরযোগসাজশ ছাড়া এই দুষ্কর্ম সম্ভব নয়। বর্তমানে বন্দিদের আদালতে সশরীরে হাজিরা বন্ধ করে দিয়ে ভার্চুয়াল হাজিরার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তার পরেও কী ভাবে জেলে বসে বন্দিরা বাইরে নির্দেশ পাঠাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা নিয়মিত বিভিন্ন জেলে তল্লাশি চালান। এ ছাড়া, সিসি ক্যামেরার নজরদারি চলে নিয়মিত। যে সব অভিযোগ উঠেছে, প্রয়োজনে তার মূলোচ্ছেদ করতে গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে বলেও জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

weeds Marijuana

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy