লিভ-ইন সঙ্গীর বিরুদ্ধে নাবালিকা মেয়েকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করেছিলেন এক মহিলা। সেই মামলায় গ্রেফতার হন ওই ব্যক্তি। প্রায় এক বছর পরে কলকাতা হাই কোর্টে এসে ‘অভিযুক্তকে’ জামিনের আর্জি জানালেন খোদ অভিযোগকারিণী। সম্প্রতি ওই মহিলার বক্তব্য শুনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। তাঁর নির্দেশ, কুড়ি হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে বারাসত বিশেষ পকসো আদালত থেকে জামিন পাবেন অভিযুক্ত। মূল মামলার শুনানিতে নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে হবে এবং সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারবেন না তিনি। এ ছাড়াও, অভিযোগকারিণী যে এলাকায় থাকেন সেখানে তিনি থাকতে পারবেন না এবং নিজের ঠিকানা নিম্ন আদালতে ও পুলিশে জমা দিতে হবে।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে গ্রেফতার হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। বছর খানেক জেলবন্দি থাকার পরে তিনি হাই কোর্টে জামিনের আর্জি জানান। সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘নির্যাতিতা’ নাবালিকা তার বয়ান পাল্টে ফেলায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুলিশ। অভিযোগকারিণী মহিলাও বয়ান দিতে চাইছেন না। এই অবস্থায় অভিযোগকারিণীকে হাজির হতে বলেছিল কোর্ট। সম্প্রতি মহিলা কোর্টে হাজির হয়ে বলেন, ‘‘আমার মেয়ে কান্নাকাটি করছে। আমার সঙ্গী (বয়ফ্রেন্ড) জেলে পচে মরছে। বাইরে আমি এবং মেয়েও মরতে বসেছি।’’ অভিযুক্ত যাতে জামিন পান, সেই আর্জি জানান তিনি। মহিলার বক্তব্য শুনে রীতিমতো বিস্মিত হন বিচারপতি এবং অভিযুক্তকে জামিন দেন।
আদালতের খবর, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণী— দু’জনেই বিবাহবিচ্ছিন্ন। ২০১৯ সাল থেকে তাঁরা ‘লিভ-ইন’ করতেন। মহিলার মেয়েও তাঁদের সঙ্গে থাকত। ২০২৪ সালের ওই মহিলা পুলিশে অভিযোগ করেন যে তাঁর ‘লিভ-ইন’ সঙ্গী নাবালিকা মেয়েকে যৌন নিগ্রহ করেছে। গ্রেফতার করা হয় মহিলার সঙ্গীকে। তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেয় পুলিশ।
অভিযুক্তের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজির দাবি, আর্থিক বিষয়কে কেন্দ্র করে বিবাদ হয় দু’জনের। টাকা না পেয়ে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয় তাঁর মক্কেলকে। নাবালিকার মেডিক্যাল রিপোর্টে কোনও নিগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাঁর দাবি, অভিযুক্ত তাঁর সঙ্গিনীর মেয়েকে নিজের সন্তানের মতোই স্নেহ করতেন। তিনি কোনও ভাবেই এই কাজ করতে পারেন না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)