Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
amartya sen

চিন্তায় আসবেন বারবারই

শনিবার সকালে কলকাতায় প্রয়াত হন শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ কৃষ্ণা বসু। শান্তিনিকেতনে নিজের বাড়ি, ‘প্রতীচী’ থেকেই সেই খবর পান অমর্ত্য সেন। শোকপ্রকাশ করার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় কৃষ্ণাদেবীকে নিয়ে নানা স্মৃতি উঠে এল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মুখে।তিনি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ যখনই পেতাম, তখন আমার খুব ভাল লাগত। অনেক সময় তিনি তাঁর পুত্র, হার্ভার্ডের অধ্যাপক সুগত বসুর কাছে যেতেন। তখন আমাদের পক্ষে একটা বড় রকম সুযোগ হত। তাঁর সঙ্গে কাছে বসা, তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হত।

কৃষ্ণা বসুর সঙ্গে অমর্ত্য সেন। ছবি আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

কৃষ্ণা বসুর সঙ্গে অমর্ত্য সেন। ছবি আনন্দবাজার আর্কাইভ থেকে।

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১৫
Share: Save:

খুব বড় রকম ক্ষতি হল। কৃষ্ণার মতো মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন। তিনি যে এখানে ছিলেন তা ভারতবর্ষের পক্ষে খুবই ভাগ্যের কথা ছিল। তিনি যে শুধু এখানে ছিলেন তা না, সেই সঙ্গে ভারতীয় রাজনীতি, ভারতের সমাজচিন্তা এ বিষয়ে তাঁর অবদানগুলি বিশ্বস্তভাবে আমাদের কাছে তুলে ধরেছিলেন। সংসদের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। সেখানে বিদেশনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান, সভাপতি হিসেবে তাঁর যা করণীয় করেছেন। তার জন্য অনেক কিছু থেকে আমরা সবাই খুব লাভবান হয়েছি। অন্যদিকে, ভারতবর্ষ বা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি কী রকম চলছে, এ বিষয়ে তাঁর বহু মূল্যবান কথা থেকে আমরা উপকৃত হয়েছি ঠিকই। কিন্তু আমার পক্ষে অবশ্য শুধু ওঁর গুণের কথা বললে চলবে না। তিনি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ যখনই পেতাম, তখন আমার খুব ভাল লাগত। অনেক সময় তিনি তাঁর পুত্র, হার্ভার্ডের অধ্যাপক সুগত বসুর কাছে যেতেন। তখন আমাদের পক্ষে একটা বড় রকম সুযোগ হত। তাঁর সঙ্গে কাছে বসা, তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হত।

আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান বলে মনে করি, যে তাঁর স্নেহ, বন্ধুত্ব পাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে এবং তাঁর থেকে নানাভাবে লাভবান হয়েছি। এতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই নানা দিক মনে পড়বে। কোনওটা কাজের দিক, কোনওটা মানসিক যোগাযোগের দিক, কোনওটা চিন্তার জগত, কোনওটা কাজের জগৎ। সব কিছুর মধ্যেই কৃষ্ণা বসু আমাদের চিন্তায়, বিশেষত আমার চিন্তায় মধ্যে বারবারই আসবেন। এই অভাব পূরণ করা সহজ হবে না। আমার ধারণা তাঁর অভাব বহুদিন আমরা বোধ করব। সেই নিয়ে আমরা কতটা ক্ষতিতে পড়লাম, এই মুহূর্তে সেই নিয়েও আমাদের চিন্তা চলতে থাকবে। অনেক সময় যার জন্য লোকে যা যা করেছেন, তার ফলে আমরা কতটা লাভবান হচ্ছি, সেটা খুব স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না, যতক্ষণ তাঁরা কাছে থাকেন।

কিন্তু তাঁরা চলে গেলে, আমরা বুঝতে পারি, কে কীভাবে, কতভাবে আমাদের সাহায্য করেছেন, জীবনকে সমৃদ্ধ করেছেন। এ সমস্ত কথা নিশ্চিতভাবেই আমাদের মাথায় এখন ঘুরবে। তাই কৃষ্ণা বসু চলে যাওয়া নিয়ে দুঃখ করার হাজারও কারণের মধ্যে আমাদের নিজেদের যে লোকসান হল, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishna Bose Amartya Sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE