Advertisement
E-Paper

বাকি সব ধারা বহাল, এখনই রেহাই নেই বাপি-অম্বিকেশের

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ধারা বাতিল হয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার পরেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্র ও হরিশচন্দ্রপুরের কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ার বাপি পাল রেহাই পাচ্ছেন না। কারণ, ৬৬এ ধারার সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্য যে সব ধারা পুলিশ জুড়ে দিয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহার করা হবে না বলে বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৫ ০৫:৩৮

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ধারা বাতিল হয়ে গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার পরেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্র ও হরিশচন্দ্রপুরের কর্মচ্যুত সিভিক ভলান্টিয়ার বাপি পাল রেহাই পাচ্ছেন না। কারণ, ৬৬এ ধারার সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্য যে সব ধারা পুলিশ জুড়ে দিয়েছিল, সেগুলো প্রত্যাহার করা হবে না বলে বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

নবান্ন-সূত্রের খবর, অম্বিকেশের নামে তথ্যপ্রযুক্তি আইনেরই ৬৬বি (অন্যের পাঠানো বার্তা অসত্‌ ভাবে গ্রহণ করে অন্যকে প্রেরণ) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারা (কথা, ভঙ্গি বা কাজের মাধ্যমে নারীর মর্যাদাহানি)-তেও মামলা করেছে পুলিশ। অম্বিকেশের বিরুদ্ধে প্রথমে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ ধারাও (মানহানি) প্রয়োগ করা হয়েছিল। পরে তা বাদ দেওয়া হয়।

এই অবস্থায় অম্বিকেশ-চার্জশিটে বহাল ছিল তিনটি ধারা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের দু’টো, ভারতীয় দণ্ডবিধির একটা। এ বার ৬৬এ বাতিল হওয়ায় রইল দু’টো। যেগুলোয় দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন।

অম্বিকেশবাবু অবশ্য মনে করেন, সুপ্রিম কোর্টের মঙ্গলবারের নির্দেশকে সম্মান জানাতে রাজ্য সরকারের উচিত তাঁর বিরুদ্ধে সব মামলা তুলে নেওয়া। প্রসঙ্গত, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনও এই মর্মে সুপারিশ করেছিল। পাশাপাশি, অম্বিকেশবাবুকে হেনস্থার জন্য রাজ্যকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টও নির্দেশটি বহাল রেখেছে, যার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য।

অম্বিকেশের চেয়েও কড়া ধারা প্রযুক্ত রয়েছে বাপি পালের বিরুদ্ধে। ৬৬এ তো ছিলই, তৃণমূল সমর্থক পরিবারের ছেলেটিকে পুলিশ বিদ্ধ করেছিল তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৬৭ (বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বিকৃত কামনার বার্তা প্রচার) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন) ও ৫০৯ ধারাতেও। ৬৬এ বাদ গেলেও অন্যগুলোয় দোষী সাব্যস্ত হলে মালদহের চাঁচলের বাসিন্দা যুবকটির সর্বোচ্চ তিন বছরের সাজা হতে পারে। বাপি যদিও আশাবাদী। “আমার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল ৬৬এ-তে। সেটা বাতিল হওয়ায় আশা করছি, অন্য ধারাগুলো সরকার তুলে নেবে,” বুধবার বলেন বাপি।

ওঁদের বিরুদ্ধে আর মামলা চালানো কি যুক্তিসঙ্গত?

আইনজ্ঞেরা দ্বিধাবিভক্ত। বম্বে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “৬৬এ বাতিল হলেও বাকিগুলো বহাল থাকবে। কারণ, একই ঘটনায় একাধিক অপরাধ ঘটে থাকতে পারে।”

তবে ৬৬এ বাতিল হওয়ায় গোটা মামলা দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখছেন চিত্ততোষবাবু। কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভগবতীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দাবি ৬৬এ রদ হয়ে যাওয়ায় অন্যগুলো টিঁকবে না। “নদীর সঙ্গে যেমন শাখানদী, তেমনই এখানে ৬৬এ-র সঙ্গে জোড়া ছিল অন্যান্য ধারা।

কিন্তু মূল নদী শুকিয়ে গেলে শাখানদী বেঁচে থাকতে পারে না,” ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভগবতীবাবু।

২০১২ সালে রেলভাড়া বাড়িয়ে মমতার কোপে পড়েছিলেন তদানীন্তন রেলমন্ত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। তাঁর জায়গায় আসেন মুকুল রায়। এর পরে সে বছরের এপ্রিলে মুকুল-দীনেশের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তৈরি একটি কার্টুন ফেসবুকে ‘ফরওয়ার্ড’ করেছিলেন অম্বিকেশবাবু। তার জেরেই কলকাতা পুলিশের হাতে তিনি গ্রেফতার হন। আর ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্যের অভিযোগে গত অক্টোবরে হাজতে ঢুকতে হয় বাপিকে। রাত পৌনে ১১টায় অভিযোগ পাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মালদহের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।

বাপির বিরুদ্ধে চার্জশিট অবশ্য এখনও জমা পড়েনি।

Ambikesh Mahapatra Jadavpur University 66A West Bengal facebook Mamata Bandopadhyay Supreme Court Bapi Pal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy