পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি তিন রাজ্যেও জাতীয়তাবাদী মিছিল করার ঘোষণা করল তৃণমূল। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করা হয়েছে সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে। তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং দেশের সেনাবাহিনীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে, সর্বভারতীয় তৃণমূলনেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য জুড়ে দেশপ্রেমিক সমাবেশের ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচি আগামী ১৭ ও ১৮ মে, বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র অনুষ্ঠিত হবে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও, অসম ও ত্রিপুরায় ১৭ মে এবং গোয়ায় ১৯ মে একই ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, বরং জাতীয় সংহতি এবং একতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ।
প্রসঙ্গত, অসমের সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে পাঁচটি আসনে জয় পেয়েছে দল। আগামী বছর যাতে অসমের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী দিতে পারে, সেই জমি তৈরি করতেই তারা ভিন্ রাজ্যে এই কর্মসূচি নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। গোয়া ও ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে আগেও প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। সাফল্য সে ভাবে ধরা দেয়নি। কিন্তু তাতে দমে না গিয়ে বিজেপির তিরঙ্গা যাত্রার পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন মমতা। এই কর্মসূচি ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের শহিদদের আত্মত্যাগ আমরা কখনওই ভুলব না। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং সেনাবাহিনীর পাশে থাকার বার্তা দিতেই আমরা এই জাতীয়তাবাদী মিছিল করছি।” পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যকে সামনে রেখে বিজেপি দেশ জুড়ে শুরু করেছে ‘তিরঙ্গা যাত্রা’। মঙ্গলবার থেকে কেন্দ্রীয় শাসকদলের এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে, যার সমাপ্তি হবে ২৩ মে। এই প্রেক্ষাপটে পাল্টা কর্মসূচির পথে হাঁটল তৃণমূল।
আগামী ১৬ মে শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কলকাতায় ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ হওয়ার কথা। ঠিক তার আগের দিন থেকেই পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চায় তৃণমূল, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, বিজেপির দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের ইস্যুকে একতরফা হতে না দিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সচেতন ভাবে দলীয় স্তরে একটি সর্বজনীন, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমের বার্তা তুলে ধরার কৌশল নিচ্ছেন। এই কর্মসূচির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এই জাতীয়তাবাদী আবহে বিজেপি যাতে একক আধিপত্য না বিস্তার করতে পারে, তা রুখতেই তৃণমূলের এই পদক্ষেপ।