E-Paper

কর্কট রোগের যোদ্ধাদের পাশে বিজয়ীদের দাঁড়ানোর ডাক

চিকিৎসা ছাড়াও ‘ক্যানসার কেয়ার অ্যান্ড কিয়োর সোসাইটি অব বেঙ্গল’ নামে সংগঠনের মূল কাজ, চিকিৎসা-ছুট রোগীদের মূল চিকিৎসা সম্পূর্ণ করানোর ব্যাপারে সাহস জোগানো।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৫ ০৯:২৬
প্রতিটি ঘরে পৌঁছে যাবে কর্কট রোগ!

প্রতিটি ঘরে পৌঁছে যাবে কর্কট রোগ! —প্রতীকী চিত্র।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা বলছে, আর মাত্র ১৫ বছর। তার মধ্যেই প্রতিটি ঘরে পৌঁছে যাবে কর্কট রোগ (ক্যানসার)। এই আগ্রাসন থামাতে সময় মতো রোগ নির্ণয়, যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি জরুরি রোগ সম্পর্কে সচেতনতাও। এ সব ভেবেই বছর দুয়েক আগে এই শহরের চার জন কর্কট রোগের চিকিৎসক মিলে তৈরি করেন একটি সংগঠন।

চিকিৎসা ছাড়াও ‘ক্যানসার কেয়ার অ্যান্ড কিয়োর সোসাইটি অব বেঙ্গল’ নামে ওই সংগঠনের মূল কাজ, চিকিৎসা-ছুট রোগীদের মূল চিকিৎসা সম্পূর্ণ করানোর ব্যাপারে সাহস জোগানো। শুক্রবার ওই সংগঠন তাদের সাংবাদিক সম্মেলনে ‘ক্যানসার নেভিগেটর প্রোগ্রাম’-এর কথা ঘোষণা করে। অর্থাৎ, আক্রান্তদের দিশা দেখাতে প্রয়োজন এক জন ক্যানসার-জয়ী যোদ্ধার। সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত চার চিকিৎসক, গৌতম মুখোপাধ্যায়, সৌমেন দাস, সায়ন পাল, তন্ময় মণ্ডলেরা জানাচ্ছেন, রোগের কথা শুনে আতঙ্কে অনেকেই চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করেন বা চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ করে দেন। রোগী যখন আসেন, তত ক্ষণে রোগ অন্তিম পর্যায়ে চলে যায়।

পরীক্ষামূলক ভাবে ১৫ জনকে নিয়ে শুরু হওয়া ক্যানসার নেভিগেটর প্রোগ্রামের ইতিবাচক উদাহরণ হাসনাবাদের বাসিন্দা আক্রিমা বিবি। স্তনের কর্কট রোগে আক্রান্ত আক্রিমা স্তন বাদ পড়ার ভয়ে চিকিৎসা করাতে চাননি। তাঁর নেভিগেটরের কাজ করেন স্তন ক্যানসারজয়ী পাপিয়া দত্তগুপ্ত। তাঁর পরামর্শে আক্রিমা চিকিৎসা সম্পূর্ণ করিয়ে এখন সুস্থ।

শুক্রবার সন্ধ্যায় কলামন্দির প্রেক্ষাগৃহে কর্কট রোগকে পরাস্ত করে জীবনের ছন্দে ফেরা বিজয়ীদের নিয়ে অনুষ্ঠান ‘জ়িন্দেগি, সেলিব্রেশন অব লাইফ’ আয়োজিত হল। রোগ ধরা পড়ার পরে তাঁদের অনিশ্চয়তা, অভিজ্ঞতা, নিজেকে সুস্থ করে তোলার লড়াইয়ের কথা শোনা গেল দুর্গাপদ, অনিন্দিতা কিংবা প্রদীপ্তদের মুখে।

গড়িয়ার বাসিন্দা, পঞ্চাশোর্ধ্ব দুর্গাপদ মইয়ের কয়েক বছর আগে পেটে ব্যথা শুরু হয়। নানাবিধ চিকিৎসা করিয়ে, গলব্লাডার বাদ দিয়েও সমস্যা কমেনি। শেষে চিকিৎসায় ধরা পড়ে, দুর্গাপদ পেটের কর্কট রোগে আক্রান্ত। সাবটোটাল গ্যাস্ট্রেকটমি করে পেটের ৯০ শতাংশ বাদ দিতে হয়। অস্ত্রোপচারের আগে-পরে ১২টি কেমো নিয়ে আপাতত সুস্থ প্রৌঢ়।

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী অনিন্দিতা সেন জিভের সামান্য গোটা নিয়ে বছর দেড়েক ভুগেছেন। শেষে ধরা পড়ে কর্কট রোগ। অস্ত্রোপচারে জিভের ২০ শতাংশ বাদ যায়। ৩০টি রেডিয়েশন চলে। অনিন্দিতা জানালেন, কী ভাবে সব কষ্ট জয় করে গানে ফিরেছেন।

স্বরযন্ত্রের কর্কট রোগে আক্রান্ত প্রদীপ্ত ঘোষের ভয়েস বক্স বাদ দিতে হয়েছিল। কৃত্রিম ভয়েস বক্সের সাহায্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে প্রদীপ কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত। কর্কট রোগাক্রান্তদের বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করার পরামর্শ দেন তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cancer Medical treatment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy