Advertisement
E-Paper

হেসে-খেলে পাঁচ মিনিটে জামিন পেলেন অনুব্রত

নিঃশব্দে আদালতে এলেন। এজলাসে দাঁড়ালেন। বিনা বাধায় জামিন নিয়ে বেরিয়েও গেলেন। পুলিশকে হুমকি দেওয়ার মামলায় সোমবার পাঁচ মিনিটেই জামিন পেলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিরোধিতা তো দূর, দর্শকের ভূমিকায় থাকলেন মামলার সরকারি আইনজীবী। ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বীরভূমের পাড়ুইয়ে কসবা গ্রামের সভায় পুলিশকে বোমা মারা ও নির্দল প্রার্থীদের (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ‘পরামর্শ’ দেন অনুব্রত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০৩:২৮
স্বস্তির নিঃশ্বাস। জামিনের পর বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

স্বস্তির নিঃশ্বাস। জামিনের পর বোলপুরে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

নিঃশব্দে আদালতে এলেন। এজলাসে দাঁড়ালেন। বিনা বাধায় জামিন নিয়ে বেরিয়েও গেলেন।

পুলিশকে হুমকি দেওয়ার মামলায় সোমবার পাঁচ মিনিটেই জামিন পেলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বিরোধিতা তো দূর, দর্শকের ভূমিকায় থাকলেন মামলার সরকারি আইনজীবী। ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটের মুখে বীরভূমের পাড়ুইয়ে কসবা গ্রামের সভায় পুলিশকে বোমা মারা ও নির্দল প্রার্থীদের (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ‘পরামর্শ’ দেন অনুব্রত। তার পরে ওই অঞ্চলে একাধিক নির্দল প্রার্থীর বাড়িতে হামলা হয়। নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষকে গুলি করে মারা হয়। অনুব্রত-সহ ৪১ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন নিহতের পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ।

মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অনুব্রত ওরফে কেষ্টর পাশে ‘শেষ শক্তি’ থাকা পর্যন্ত দাঁড়ানোর বার্তা দেন। ধরা দূরে থাক, জেরাও করেনি পুলিশ। সিউড়ির তৎকালীন সিজেএম রাজেশ চক্রবর্তী জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজুর নির্দেশ দিলেও পাড়ুই থানা তা করেনি। দু’বছর তদন্ত করে ৩ টি জামিনযোগ্য ধারা দিয়ে বর্তমান সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে গত বুধবার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা।

তারই ভিত্তিতে আগামী ৭ জুলাই অনুব্রতকে আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়। সে দিন হইচই এবং সংবাদমাধ্যমের তৎপরতা অবশ্যম্ভাবী ছিল। তার আগেই চুপচাপ এসে জামিন নিলেন অনুব্রত। বীরভূমের সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।’’ মামলার সরকারি কৌঁসুলি কুন্তল চট্টোপাধ্যায় জানান, হাজার টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর হয়েছে।

এ দিন যে দ্রুততায় অনুব্রত জামিন পেলেন, আদালতের কাজে অভ্যস্তদের বড় অংশ তাতে বিস্মিত। নেতার আইনজীবী মৃদুল দে আগেই আদালতে জামিনের আর্জি জমা করেছিলেন। বেলা ১১টা নাগাদ লালচে পাঞ্জাবি পরে কাঠগড়ার কাছে এসে দাঁড়ান অনুব্রত। আবেদনটি বিচারকের নজরে আনা হয় এবং অনুব্রত জামিন পান। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই গোটা পর্ব মিটে যায়, যেখানে সাধারণত জামিন পেতে কয়েক ঘণ্টা লাগে। প্রত্যাশিত ভাবেই, এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা আহ্বায়ক অর্জুন সাহার আক্ষেপ, ‘‘আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও পুলিশ অনুব্রতর বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারা দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর বিরাগভাজন হবে এমন সাহস কারও আছে নাকি!’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘আইনজীবীরাই নন, নিম্ন আদালতের বিচারকেরাও এত চাপে যে তাঁদের পক্ষে শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন ভাবে কোনও নির্দেশ দেওয়া কার্যত সম্ভব নয়। হাইকোর্টে গেলে যদিও বা তাঁরা কিছুটা চাপমুক্ত হতে পারেন, নিম্ন আদালতে তা অসম্ভব।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোমের মতে, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত এই সব নেতাদের শাস্তি হবে না।’’

অনুব্রত অবশ্য স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘জীবনে আমি একটা পিঁপড়েও মারিনি। আদালতের নির্দেশ আমি শ্রদ্ধা করি। আগামী ৭ তারিখ আদলতে যেতেই হতো। তার আগে জামিন নিলাম। সত্যের জয় হবেই।’’

anubrata gets bail anubarat mondal bail five minutes suri court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy