Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাপোলোর দাবি ছিল গয়না দিন সঞ্জয়-পত্নী

ফিক্সড ডিপোজিট বন্ধক রেখে অ্যাপোলো হাসপাতালের খাঁই মিটিয়েও ডানকুনির সঞ্জয় রায়কে বাঁচানো যায়নি। তাঁর মৃত্যুর পরে পুলিশের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, টাকা আদায়ের জন্য সঞ্জয়ের স্ত্রীকে তাঁর গয়নাগাঁটিও খুলে দিতে বলেছিল ওই হাসপাতাল।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৫
Share: Save:

ফিক্সড ডিপোজিট বন্ধক রেখে অ্যাপোলো হাসপাতালের খাঁই মিটিয়েও ডানকুনির সঞ্জয় রায়কে বাঁচানো যায়নি। তাঁর মৃত্যুর পরে পুলিশের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, টাকা আদায়ের জন্য সঞ্জয়ের স্ত্রীকে তাঁর গয়নাগাঁটিও খুলে দিতে বলেছিল ওই হাসপাতাল।

ফুলবাগান থানায় অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায় এবং তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেছেন সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি রায়। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই হাসপাতালের বিলিং সেকশনের এক কর্তা টাকা না-পেয়ে সঞ্জয়ের স্ত্রীর গয়না আটকে রাখার হুমকি দিয়েছিলেন। এই দাবির সমর্থন মিলেছে সঞ্জয়-পত্নী রুবিদেবীর বক্তব্যেও। রুবিদেবী সোমবার বলেন, ‘‘গত ২২ ফেব্রুয়ারি আমার স্বামীকে অ্যাপোলো থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় বিপুল অঙ্কের যে-বিল ধরানো হয়, তত টাকা আমাদের কাছে ছিল না। তখনই বিলিং বিভাগের এক কর্তা আমাকে বলেন, ‘আপনার গায়ের সোনার গয়না খুলে দিন’!’’

শেষে ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজ বন্ধক রেখে সঞ্জয়কে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাড়ে অ্যাপোলো। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এসএসকেএমে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি রুবিদেবীর স্বামীকে।

আরও পড়ুন: ডাক্তারদের সময়-বিধি বেঁধে বিতর্কে নির্মল

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রথমে চিকিৎসায় গাফিলতির তদন্ত করা হচ্ছিল। ওই তদন্তে তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তার পরে তোলা আদায়ের অভিযোগের তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ওই হাসপাতালের বিলিং সেকশনের কয়েক জন যে জোর করে টাকা আদায় করতেন, তার প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের কয়েক জন কর্তাও।

পুলিশি সূত্রের খবর, অ্যাপোলোর বিলিং বিভাগের কিছু ত্রুটি এবং গরমিলও সামনে এসেছে। এমন কিছু শারীরিক পরীক্ষার বিল জুড়ে দেওয়া হয়েছিল, যেগুলো মোটেই করা হয়নি। ওই হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ এবং বিলিং সেকশনের সার্ভার খতিয়ে দেখার জন্য লালবাজারের সেগুলো বাজেয়াপ্ত করেছে।

১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্ঘটনায় জখম হয়ে অ্যাপোলোয় ভর্তি হন সঞ্জয়। কোনও উন্নতি না-হওয়ায় সাত দিন পরে তাঁর পরিবার তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই বেসরকারি হাসপাতাল তখনই চিকিৎসা বাবদ প্রায় সাত লক্ষ টাকা দাবি করে রোগীকে আটকে দেয়। পরে ফিক্সড ডিপোজিটের নথি জমা দিয়ে সঞ্জয়কে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। তার পরেই অ্যাপোলো ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় টালবাহানা ও গাফিলতি এবং জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jewellery Apollo Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE