সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তের দায়িত্ব তাঁর হাত থেকে চলে গিয়েছে সিবিআই-এর কাছে। তাঁর হাতে দায়িত্ব থাকাকালীন ওই তদন্তের অগ্রগতি দেখে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। নাট্যকর্মী সুমন মুখোপাধ্যায়কে টানা ২২ ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখেও সমালোচনার চাপে তাঁকে গ্রেফতার করা থেকে কার্যত পিছিয়ে এসেছেন তিনি।
বিধাননগর কমিশনারেটের সেই গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষকে নদিয়ার পুলিশ সুপারের পদে বদলি করা হয়েছে। সোমবার এই নির্দেশ জারি করে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। অর্ণববাবুর জায়গায় বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা-প্রধানের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়নি। নবান্ন সূত্রের খবর, বিধাননগরের গোয়েন্দা-প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও প্রশাসনের খাতায় অর্ণববাবু রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ১১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ড্যান্ট। পুরুলিয়ায় তাঁর অফিস। ডেপুটেশনে তাঁকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে আনা হয়। নদিয়ার এসপি হওয়ার পরে তিনি ওই পদে থাকতে পারবেন না বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে গ্রেফতারের আগে কুণাল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল বিধাননগরের ওই গোয়েন্দা-প্রধানের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারির আগে কুণাল অভিযোগ করেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বসিয়ে রেখে তাঁকে রীতিমতো হুমকি দিয়েছিলেন অর্ণব ঘোষ। অভিযোগ, গোয়েন্দা-প্রধান তাঁকে বলেছিলেন, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে একাধিক মামলায় তাঁকে জড়িয়ে দেওয়া হবে। তার জেরে গ্রেফতার হওয়ার আগে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অর্ণববাবুর নামে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কুণাল। যদিও সেই অভিযোগের তদন্ত কার্যত এগোয়নি বলেই পুলিশি সূত্রের খবর।
প্রশাসনিক পদকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অভিযোগও বারবার উঠেছে অর্ণববাবুর বিরুদ্ধে। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারিবারিক আয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে সিপিএম নেতা গৌতম দেবের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অনুপস্থিতিতেই বিধাননগর পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে নোটিস লটকে দিয়ে আসে।
শুধু সিপিএম নেতাদের বিরুদ্ধেই নয়, অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের জখম হওয়ার ঘটনায় নাট্যকর্মী সুমন মুখোপাধ্যায়কে হেনস্থা করার অভিযোগও ওঠে অর্ণববাবুর বিরুদ্ধে। সুমনবাবুকে নিউ টাউন থানায় ডেকে পাঠিয়ে টানা ২২ ঘণ্টা বসিয়ে গ্রেফতারের প্রস্তুতি শুরু করেছিল পুলিশ। কিন্তু প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসে। কোনও লিখিত অভিযোগ ছাড়াই সুমনবাবুর মতো বিশিষ্টজনকে এ ভাবে হেনস্থা করা হল কেন, প্রশ্ন করায় সাংবাদিক বৈঠকেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন অর্ণববাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy