Advertisement
E-Paper

পানাগড়: সুতন্দ্রার মৃত্যুর পর পালিয়ে গিয়েছিলেন কেন? মুখ খুললেন সাদা গাড়ির ধৃত চালক বাবলু

পানাগড়কাণ্ডে চার দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হন সেই সাদা গাড়ির চালক বাবলু যাদব। অন্ডাল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে দুর্গাপুর আদালতে হাজির করানো হয়।

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩৫
সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে ধৃত বাবলু যাদবকে আদালতে হাজির করানো হচ্ছিল শুক্রবার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে ধৃত বাবলু যাদবকে আদালতে হাজির করানো হচ্ছিল শুক্রবার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

পানাগড়কাণ্ডে চার দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন সেই সাদা গাড়ির চালক বাবলু যাদব। পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডাল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এর পর শুক্রবার তাঁকে দুর্গাপুর আদালতে হাজির করানোর সময় প্রথম বার মুখ খুললেন বাবলু। কোর্টে প্রবেশ করানোর সময় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, গত রবিবার রাতে ঘটনার পর কেন সেখান থেকে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন? জবাবে বাবলু বলেন, ‘‘ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমি। তাই পালিয়ে গিয়েছিলাম।’’

গত রবিবার রাতে পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে চন্দননগরের বাসিন্দা, একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় (২৭)-এর । প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ ওঠে, কয়েক জন মত্ত যুবক একটি সাদা গাড়ি নিয়ে সুতন্দ্রাদের নীল গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিলেন। ধাওয়া করে সুতন্দ্রাদের গাড়িটিকে বার বার ধাক্কাও দেন। তার ফলেই উল্টে যায় সুতন্দ্রাদের গাড়ি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তরুণীর। এই দাবি করেছিলেন ঘটনার সময় সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা সহকর্মীরা। যদিও পুলিশের দাবি, সে রকম কিছুই ঘটেনি। বরং, সুতন্দ্রার গাড়িই সাদা গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিল। গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছিল রেষারেষি করতে গিয়েই। কিন্তু তার পরেও কেন ওই সাদা গাড়ির মালিক বাবলু যাদবকে গ্রেফতার করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে না, প্রশ্ন উঠছিল তা নিয়ে। সেই আবহে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হন বাবলু।

ঘটনার তদন্তে নেমেই পুলিশ জানতে পেরেছিল, ওই সাদা গাড়িটি বাবলুর। গাড়ির মালিক তিনি। ঘটনার রাতে তিনিই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবলুর গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা রয়েছে। প্রশ্ন উঠছিল, বাবলু সম্পর্কে এত কিছু জানা গেলেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ? সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় গত সোমবার কাঁকসা থানায় গিয়ে সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। বৃহস্পতিবার বাবলু গ্রেফতার হওয়ার পর মৃতার মা বলেন, ‘‘সাদা গাড়িতে তো আরও অনেকে ছিলেন। তাঁদের কেন এখনও গ্রেফতার করা গেল না? মেয়ের গাড়িতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। জানার চেষ্টা হোক, সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল। স্বচ্ছ তদন্ত হোক। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই। অপরাধী বা অপরাধীদের শাস্তি হোক।’’

পানাগড়ের রাইসমিল রোড থেকে একটি ছোট রাস্তায় ঢুকে শেষ প্রান্তে বাবলুর বাড়ি। রবিবার রাতের গাড়ি দুর্ঘটনাটিও সেই রাইসমিল রোডেই ঘটেছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবলুর পরিবারের আদি বাসস্থান উত্তরপ্রদেশে। বাবলুর ঠাকুরদা সেখান থেকে পানাগড়ে এসে দোকানে কাজ শুরু করেন। প্রায় দু’দশক আগে এলাকার একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ বেচাকেনার দোকানে কাজ শুরু করেন বাবলু। বছর আটেক আগে নিজেই গাড়ির যন্ত্রপাতির ব্যবসা শুরু করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেকের দাবি, অসমের কোনও এক ব্যবসায়ী বাবলুকে সহযোগিতা করতেন। পুরনো গাড়ির স্প্রিং ও পাতি কিনে তা বিক্রি করেন বাবলু। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চোরাই গাড়ির যন্ত্রপাতি কেনার অভিযোগে বুদবুদ থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তিন দিন পরে তিনি জামিন পান। তার পর থেকে বাবলুর ব্যবসা আড়ে-বহরে বেড়েছে। বেড়েছে বাবলুর প্রতিপত্তিও।

স্থানীয় সূত্রে জানা খবর, বাবলুর দোকানের এক কর্মী পায়ে চোট পেয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। জনা চারেক কর্মীকে নিয়ে রবিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁকে দেখতেই বর্ধমানে গিয়েছিলেন বাবলু। সেখান থেকে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটে।

Panagarh Accident Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy