Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
TMC

Maoist: বিস্ফোরক পোঁতে ধৃত তৃণমূল নেতা

এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপ নেই বলেই বারবার দাবি করে পুলিশ-প্রশাসন।

ধৃতদের কোর্টে তোলা হচ্ছে। হলুদ সোয়েটার গায়ে শম্ভু।

ধৃতদের কোর্টে তোলা হচ্ছে। হলুদ সোয়েটার গায়ে শম্ভু। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৫১
Share: Save:

‘মাওবাদী প্যাকেজ’ ও চাকরি না পেয়ে হতাশায় ফের মাওবাদীদের সঙ্গে যোগসাজশের তত্ত্ব সামনে এসেছিল আগেই। লালগড়ের যুব তৃণমূল নেতা শম্ভু হাঁসদার বাড়ির গোয়ালঘরে মাইনও মিলেছিল। এ বার পুলিশের দাবি, শম্ভু-সহ ধৃত পাঁচ জনকে জেরা করে জানা গিয়েছে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন প্রান্তে বিস্ফোরক পুঁতে রেখেছিল তারা। ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিরাকাটা, ঝাড়গ্রাম জেলার রামগড়, বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় গিয়ে তল্লাশিও চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু মেলেনি।

এ রাজ্যের জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপ নেই বলেই বারবার দাবি করে পুলিশ-প্রশাসন। সেখানে যুব তৃণমূল নেতার মাওবাদী যোগ এবং একাধিক জেলায় সদলবলে ঘুরে বিস্ফোরক পুঁতে রাখার তথ্য সামনে আসায় প্রশ্ন উঠছে। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘ওরা কোনও নাশকতা করার আগেই তো ধরা হয়েছে। কোনও বিস্ফোরণ ঘটাতে পারেনি।’’ ধৃতেরা তদন্তের কাজে যথাযথ সহযোগিতা করেনি বলেও দাবি পুলিশের। সোমবার আদালতে মামলার তদন্তকারী অফিসার আরও জানিয়েছেন, ধৃতদের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশার মাওবাদীদের যোগসাজশ স্পষ্ট। ধৃতদের সহযোগিতায় ঝাড়খণ্ডের গুরুবান্দা এবং ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ থানা এলাকায় মাইন মিলতে পারে। তাই এ দিন ফের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ অভিযুক্তকে আরও সাত দিন পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তদের আইনজীবী কৌশিক সিংহ অবশ্য দাবি করেন, ‘‘ধৃতদের সাত দিন হেফাজতে নিয়েও কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মক্কেলদের থেকে জেনেছি, তাঁদের কোথাও নিয়ে যায়নি। এই পাঁচ জনকে পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসিয়েছে।’’ ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতের বিচারক অবশ্য ধৃতদের ফের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও দাবি, এ রাজ্যের জঙ্গলমহলের প্রাক্তন মাওবাদীদের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার মাওবাদীরা যোগাযোগ শুরু করেছে। মাইন উদ্ধারে মূল অভিযুক্ত শম্ভু হাঁসদা লালগড়ের রামগড় অঞ্চলের শালুকা (পশ্চিম) বুথের যুব তৃণমূল সভাপতি। শম্ভুদের প্রথমে মাদক মামলায় ধরা হয়। পরে মাইন মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শম্ভুর দাদা নন্দলাল হাঁসদা প্রাক্তন মাওবাদী। তিনি আত্মসমর্পণ প্যাকেজে চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু শম্ভু পায়নি বলে ক্ষোভ ছিল। তাই সে ফের মাওবাদী সংসর্গে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশের দাবি, ধৃত পাঁচ জনই জঙ্গলমহলে অশান্তি পর্বে মাওবাদীদের হয়ে কাজ করেছে। মাঝে কিছু দিন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও ফের তারা রামগড় স্কোয়াডে কাজ শুরু করেছিল। জেরায় শম্ভু-সহ পাঁচ জন ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের কয়েক জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাইন সংগ্রহের কথা স্বীকার করেছে বলেও দাবি করেছে পুলিশ। শম্ভুর বড়দি কাজলমণি হাঁসদা ও স্ত্রী মালতি হাঁসদা এ দিন আদালতে এসেছিলেন। কাজলমণি বলেন, ‘‘বড় ভাই নন্দলাল মাস ছয়েক আগে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরি পেয়েছে। ছোট ভাই তৃণমূল করত। ওর সঙ্গে থানার অফিসারদেরও ভাল যোগাযোগ ছিল। নিয়মিত থানায় যেত। কোথা থেকে এ সব হল কিছুই বুঝছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Maoists Ex maoists Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE