শাহজাহান শেখ। — ফাইল চিত্র।
দিন সাতেক আগেই সংবাদমাধ্যমকে দেখে আঙুল নেড়ে একটি বার্তা দিয়েছিলেন শাহজাহান শেখ। সেই বার্তায় মিশে ছিল ‘নির্দেশ’। তর্জনী উঁচিয়ে সন্দেশখালির ‘বাঘ’ হয়তো বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কোনও কথা বলবেন না। এক সপ্তাহ পর সেই শাহজাহানই মুখ খুললেন। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে দেখে সিবিআই কর্তা এবং নিরাপত্তা রক্ষীদের ঘেরাটোপ পেরিয়ে আচমকা ছুড়ে দিলেন কয়েকটা কথা।
বুধবার রাতে সিবিআই হেফাজতে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর শাহজাহানকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য জোকা-র ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল সিবিআই। সেখানেই সংবাদমাধ্যমকে দেখে প্রথম বার মুখ খুললেন শাহজাহান। যা বললেন, তার অর্থ, তিনি সুবিচার আশা করছেন, তবে ইডি-সিবিআই-পুলিশ বা আদালতের কাছে নয়! শাহজাহানের সেই কথায় আশার থেকে বেশি নিরাশাই চোখে পড়ছিল।
৫৬ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দেশখালির ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান। সে দিনই তাঁকে আদালতে তোলা হয়। কয়েক মিনিটের শুনানি শেষ করে শাহজাহানকে নিয়ে যখন বেরিয়ে আসছে পুলিশ বাহিনী, তখন বাইরে শাহজাহানের সঙ্গে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছিলেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তবে শাহজাহান কথা বলেননি। ধোপদুরস্ত সাদা কুর্তা-পাজামা এবং জ্যাকেট পরে গটগটিয়ে আদালত থেকে বেরোনোর সময় একটি বার সংবাদমাধ্যমের দিকে তাকানওনি তিনি। শুধু আঙুল নেড়ে কিছু বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। সেই শাহজাহান শুক্রবার ঠিক কী বললেন?
মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য রওনা হওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমকে দেখে শাহজাহান হঠাৎই বললেন, ‘‘সব মিথ্যে কথা’’। এর পরেই সন্দেশখালির ‘প্রভাবশালী’ নেতা বলেন, ‘‘উপরওয়ালা এর বিচার করবে।’’
উল্লেখ্য, রাজ্যের তদন্তকারীদের হাত থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হেফাজতে যাওয়ার পরই শাহজাহানের শরীরী ভাষা বদলেছে বলে মন করছিল রাজনৈতিক মহলের একাংশ। নিজাম প্যালেসে আর গত বৃহস্পতিবারের ঠাট-বাট দেখা যায়নি শাহজাহানের। উধাও হয়েছে ধোপদুরস্ত সাদা কুর্তা-পাজামা। বদলে গায়ে চেপেছে সাদা টি শার্ট। ভাবভঙ্গিতেও ‘দাপট’-এর লেশমাত্র নেই বলে মনে করেছেন শাহজাহানের পুরনো পরিচিতেরা।
প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় ইডির তদন্তকারীদের হামলার ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। শাহজাহানের দু’টি মোবাইলের ‘কল ডিটেলস’-ই এখন তদন্তের মূল হাতিয়ার বলে দাবি সিবিআই সূত্রে। ওই ফোন দু’টির তথ্য থেকে সে দিনের ঘটনায় জড়িতদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। যদিও জেরায় শাহজাহানের দাবি, তিনি কাউকে ফোন করেননি। তাঁর বাড়িতে ইডি হাজির হলে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা-অনুগামীরা তাঁকে ফোন করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy