এগারো বছর আগে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে জেএমবি জঙ্গিদের ডেরায় বিস্ফোরণ দেখেছিল রাজ্য। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের এসটিএফের হাতে সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরাও তেমনই বিস্ফোরক তৈরির চেষ্টা শুরু করেছিল। ধৃতদের এক জনের কাছ থেকে বিস্ফোরক তৈরির নথিও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে বিস্ফোরক তৈরির মালমশলা শেষমেশ জোগাড় করা গিয়েছিল কি না, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নন গোয়েন্দারা। এ ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি আজমল হোসেন, সাহেব আলি খান এবং মহম্মদ আব্বাসউদ্দিন মোল্লাকে পাকড়াও করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রথম দু’জন বীরভূম এবং অন্য জন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। বছর দেড়েক ধরে বাংলাদেশের একাধিক জঙ্গি নেতার নির্দেশে এ রাজ্যে জেএমবির নতুন মডিউল তৈরি করেছিল তারা। জঙ্গিদের জেরা করে এবং বাজেয়াপ্ত নথির ভিত্তিতে গোয়েন্দাদের দাবি, নাশকতার জন্য অস্ত্র এবং বিস্ফোরক জোগাড় করছিল তারা। খাগড়াগড়েও জঙ্গিরা বিস্ফোরক তৈরি করছিল এবং সেই সময়েই বিস্ফোরণ হয়। এ বারে ধৃত তিন জনকে জেরা করে তদন্তকারীদের দাবি, বীরভূমে খাদানের জন্য ব্যবহৃত বিস্ফোরক খুব সহজেই চোরাপথে দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছয়। গত কয়েক বছরে এমন প্রচুর বিস্ফোরক এনআইএ বাজেয়াপ্ত করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ধৃতেরা অনলাইনে সংগঠন বিস্তারের কাজও শুরু করেছিল। যুবক-যুবতীদের মধ্যে জিহাদি আদর্শ ছড়িয়ে সংগঠনে টেনে আনার চেষ্টাও হয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, আজমল এই মডিউলের মাথা বলে মনে করা হচ্ছে। তার নির্দেশেই আব্বাস অস্ত্র জোগাড়ের চেষ্টা করছিল। গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, জেএমবি-র এই নতুন মডিউলে আরও দু’জনের কথা জানা গিয়েছে। আফজলের হাত ধরে তারা জঙ্গিচক্রে যোগ দিয়েছিল। বাংলাদেশের এক জঙ্গিও এ দেশে এসে এই মডিউলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। ওই বাংলাদেশি কোথায় কোথায় গিয়েছিল, জানার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)